মাদারীপুরের কালকিনিতে বিয়ের প্রলোভনে এক তরুণীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের পর এখন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে এক সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে।
গত দুই দিন ধরে বিয়ের দাবিতে ওই সেনাসদস্যের বাড়িতে অবস্থান নিলে ওই মেয়েকে মারধর করে বের করে দেয়া হয় বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীর। পরবর্তীতে মানসম্মানের ভয়ে পরিবারের লোকজন মেয়েটিকে নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে তালাবদ্ধ করে রাখে।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী জানায়, একই এলাকার হেমায়েত হোসেনের ছেলে সেনাসদস্য সাকিব হোসেনের (২৪) সঙ্গে প্রায় দেড় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। সম্পর্ক থাকাকালীন সময়ে নিজ বাড়ি ও ঢাকার একটি হোটেলসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তারা একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়। এতে করে গর্ভবতী হয়ে পড়ে মেয়েটি। পরবর্তীতে সাকিবের কথা মতো ঔষধ খেয়ে ২ মাসের বাচ্চা নষ্ট করে।
এতকিছুর পরও হঠাৎ মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় সাকিব। ফলে মেয়েটি বাধ্য হয়ে সোমবার দুপুরে সাকিবের বাড়িতে গেলে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় অভিযুক্তের পরিবার।
এ বিষয়ে সাকিবের মা জানান, ছেলের এসব ঘটনা তারা জানেন না। ছেলে কোথায় থাকে তাও তিনি বলতে রাজি নন। তবে মেয়েটিকে কোন মারধর করা হয়নি বরং মেয়েটি এসে তাদের বাড়িতে ভাঙচুর করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, যদি ওই ছেলে আমাদের মেয়েকে বিয়ে করে তবে আমাদের কোন আপত্তি নাই।
এলাকাবাসী জানান, এর আগেও সেনাসদস্য সাকিব পার্শ্ববর্তী শিকারমঙ্গল বাজারের কাছে এক পুলিশ সদস্যের মেয়ের সাথে অবৈধ মেলামেশা করে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে ওই ঘটনা ৪ লাখ টাকায় মীমাংসা করা হয়। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী ইচাগুড়া এলাকার এক গৃহবধূর সঙ্গেও তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে জানান তারা।
এ ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত সাকিবের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে ওই তরুণীকে বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিব বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান এবং এই বিষয়ে যাতে কোন নিউজ করা না হয় সেজন্য সাংবাদিকদের অনৈতিক প্রস্তাবও দেন।
তবে স্থানীয় সাবেক মহিলা মেম্বার ও ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহার জানান, আমি দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। অতি শীঘ্রই ছেলে ছুটিতে আসলে তাদের বিয়ে দেয়া হবে।
এ ঘটনার বিষয়ে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, যেহেতু মেয়েটি এখন তার পরিবারের কাছে রয়েছে, সেহেতু বর্তমানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে মেয়েটি বা তার পরিবার থানায় এসে অভিযোগ দিলে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।