কনের বাড়িতে বর আপ্যায়নের সকল প্রস্তুতি শেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বরযাত্রী নিয়ে বর হাজির! বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কাজি। এমন সময় খবর এল বর বিবাহিত! সেও আবার একটি নয়, এর আগে বর আরও দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর একটি ও দ্বিতীয় স্ত্রীর দুটি সন্তান রয়েছে তাঁর।
অবশেষে বরের পোশাক খুলে নিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয় সিপন মিয়া (৩০) নামের ওই যুবককে। গতকাল রোববার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
মেয়ের পরিবার বলছে, ছেলের বিয়ের ঘটনাগুলো জানতেন না তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীরা বলছে, উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের দড়িকুঞ্জনপুর গ্রামের লিয়াকত মিয়ার ছেলে সিপন মিয়া। পেশায় তিনি একজন রাজমিস্ত্রি। গতকাল রোববার গ্রামের ২৫-৩০ জন বরযাত্রী নিয়ে একই ইউনিয়নের এক দিনমজুরের কলেজপড়ুয়া মেয়েকে বিয়ে করতে যান। যাওয়ার পথে সিপনের দ্বিতীয় স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে রাস্তায় বাধা দেন। সেই বাধা ডিঙিয়ে সিপন বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হাজির হন।
পরে সিপনের দ্বিতীয় স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে সবকিছু খুলে বলেন। এ সময় চেয়ারম্যান বিয়ে বাড়িতে এ সংবাদ পাঠান। সঙ্গে সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে হই-হুল্লোড় শুরু হয়। বন্ধ হয়ে যায় বিয়ের সকল আয়োজন।
প্রত্যক্ষদর্শী সাবেক মিয়া বলেন, বরের আগের বিয়ের সংবাদে এই বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বরকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে আগের দুই বিয়ের কথা স্বীকার করেছে। প্রথম স্ত্রীর ৯ বছরের এক মেয়েও আছে। তবে তাঁর সঙ্গে বিগত ৫ বছর যাবৎ কোনো যোগাযোগ নেই। এটা তাঁর তৃতীয় বিয়ে ছিল। পরে তার গা থেকে বরের পোশাক খুলে রেখে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী তরুণীর দিনমজুর বাবা বলেন, বরের আগের বিয়ের বিষয়ে আমরা কিছু জানতাম না। আমাদের কাছে বিয়ের বিষয় গোপন করা হয়েছিল। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে বিয়ের আয়োজন করেছিলাম। প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমি ক্ষতিপূরণ চাই। তবে বিয়ে পাগলা ছেলের কবল থেকে আমার মেয়েটি রক্ষা পাওয়ায় আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই।
এ ঘটনার বিষয়ে পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য দড়িকুঞ্জনপুর গ্রামের বাসিন্দা খালিদ হাসান খালেদ বলেন, তৃতীয় বিয়ে করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাধা পেয়ে বিয়ে ভেঙেছে বলে জেনেছি। গ্রামের অতি উৎসাহী কিছু লোক এ বিয়েতে বরযাত্রায় গিয়েছিলেন। এ সব বিষয়ে গ্রামবাসীকে নিয়ে সভা করে সামাজিক প্রতিকার নেব।
পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঙুর মিয়া বলেন, ঘটনা শুনে এলাকার গণ্যমান্য লোকজনকে পাঠিয়ে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করেছি।
সূত্র: আজকের পত্রিকা