‘এত বেশি শিশুর মৃতদেহ দেখেছি, আমি আর ঘুমাতে ও খেতে পারি না’ - News Portal 24
ঢাকাSunday , ১২ নভেম্বর ২০২৩

‘এত বেশি শিশুর মৃতদেহ দেখেছি, আমি আর ঘুমাতে ও খেতে পারি না’

নিউজ পোর্টাল ২৪
নভেম্বর ১২, ২০২৩ ৯:৩১ অপরাহ্ন
Link Copied!

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রতিদিনই ইসরায়েলের নির্বিচারে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান হামলায় এত সংখ্যক মানুষ নিহত হচ্ছে যে তাদেরকে গণকবর না দেয়া ছাড়া এখন আর কোনো সমাধান নেই। ভয়াবহতা আর নির্মমতা কেবলই বাড়ছে।

সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চালানো বর্বরতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ থামার কোনো আশাও নেই।

সাদি বারাকা নামের ৬৩ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে গাজায় কবর খুঁড়ে আসছেন। সংবাদ মাধ্যম আনাদোলুর সঙ্গে তিনি তার সম্প্রতি কষ্ট ও শোকের কথা বিনিময় করেছেন।

৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তাকে দাফন করতে হয়েছে বিপুল সংখ্যক শিশু এবং নারীর মৃতদেহ।

কবর খনন পেশায় তার জীবন এখন প্রায় শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যা তিনি দেখছেন তা অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে ভয়ঙ্কর। প্রতিদিন যে পরিমাণ শোকের মধ্যে দিয়ে তাকে যেতে হচ্ছে যে তিনি এখন আর ঘুমাতে ও খেতে পারছেন না।

গাজার সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস নির্মূলে ইসরায়েলের চালানো এই হামলার উদ্দেশ্য হলেও সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, নির্বিচারে এই হামলায় ভিকটিম হচ্ছে বিপুল সংখ্যক নারী এবং শিশু। এরাই মোট নিহতের ৭০ শতাংশের বেশি।

তিনি বলেন, ‘আমরা গণকবর করতে বাধ্য হয়েছি। প্রতিদিন এতো সংখ্যক মৃতদেহ রাখার জন্য কোন জায়গা নেই আমাদের হাসপাতালে। কবর চিহ্নিত করার জন্যে যে সিমেন্টের ব্লক বা স্ল্যাব বসানো হয় তাও আর আমাদের হাতে মজুদ নেই। গাজায় সবকিছু ফুরিয়ে গেছে।’

‘আমি আজ পর্যন্ত, শিশু, নারী এবং বয়স্কদের বিরুদ্ধে এমন অপরাধ দেখিনি, তারা (ইসরায়েলি বাহিনী) যে নাৎসি শাসনের বিভীষিকার কথা বলেন। সেই সময়ও এতো বেশি নিরাপরাধ শ্রেণির মানুষ নিহত হয়নি। গতকাল আমি প্রায় ৬০০ শহীদকে দাফন করেছি, গত পাঁচ বছরে এতো বেশি আমি দাফন করে নাই।’

আমি এমন বর্বরতা আগে দেখিনি। যাদের দাফন করেছি তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গণকবর প্রায় ৬ মিটার (২০ ফুট) আকারের এবং এতে প্রায় ৪৫ জন লোককে সমাহিত করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় গণকবরটিতে ১৩৭ জনকে সমাহিত করা হয়েছে।

আনাদোলুকে তার দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বারাকা বলেন। ‘অনেক সংখ্যক শিশুর লাশ দেখে আমি ঘুমাতে পারি না। এই শিশুদের কি দোষ ছিল?’

‘আমরা সাহায্য এবং খাবার চাই না; আমরা আবু আম্মারের (প্রয়াত ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত) দিন থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা করে আসছি। এদিকে, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শুধুমাত্র রক্তপাতের পিছনে ছুটছেন।