চার হাত ঘুরে এসে ১১ টাকার ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়! - News Portal 24
ঢাকাTuesday , ১৫ অগাস্ট ২০২৩

চার হাত ঘুরে এসে ১১ টাকার ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়!

নিউজ পোর্টাল ২৪
অগাস্ট ১৫, ২০২৩ ৭:৪৬ পূর্বাহ্ন
Link Copied!

খামারে ১১ টাকা ৪০ পয়সায় বিক্রি হওয়া একটি ডিম কয়েক হাত ঘুরে ভোক্তা পর্যায়ে গিয়ে দাম ঠেকছে ১৫ টাকায়। ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, গত কয়েকদিনে মধ্যসত্ত্বভোগীরা হাতিয়ে নিয়েছে শত কোটি টাকা। আড়তদাররা বলছেন, ডিম কেনার রশিদ দেয় না কর্পোরেট খামারগুলো। আর ভোক্তা অধিদপ্তর বলছে, বুধবার থেকে পাকা রশিদ ছাড়া ডিম বিক্রি করা যাবে না।

গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরেই অস্থির ডিমের বাজার। ডজন প্রতি ডিমের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১৭০ টাকায়। ফলে একটি ডিম কিনতে ভোক্তার খরচ হচ্ছে ১৪ টাকারও বেশি, যা ডিমের দামে রেকর্ড। অথচ পাশের দেশেই একটি ডিমের দাম ৭ থেকে ৮ টাকা।

এ পরিস্থিতিতে, গত রোববার, ডিমের দাম না করলে প্রয়োজনে বিদেশ থেকে ডিম আমদানি করা হবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় চাইলে ডিমের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিতে পারে। ডিমের কত উৎপাদন হচ্ছে, বাজারে কত চাহিদা আছে, ঘাটতি কত- এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আমাদের কিছুই জানায়নি। এমনকি ডিমের উৎপাদন খরচ কত এবং কত টাকা দাম নির্ধারণ করা উচিত সেটাও তারা বলেনি। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যদি এসব তথ্য আমাদের দেয়, তবে বাজার বিশ্লেষণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির অনুমতি দেবে।’

একই দিন সচিবালয়ে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে খামারিদের সাথে বৈঠকে বসেন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সভায় তিনি বলেন, ‘প্রতিটা ডিম উৎপাদনে সাড়ে ১০ টাকা খরচ হয়। ১২ টাকার উপরে কোন ভাবে দাম হওয়া উচিত নয়।’

ডিম আমদানির কথা উঠতেই একদিনের ব্যবধানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে ডিমের দাম ডজন প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে এসেছে। রোববারও যেখানে এক ডজন ডিম হয়েছে ১৭০ টাকায়, সোমবার তা বিক্রি হয়েছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।

আরও পড়ুনঃ  বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে চাই : নূরুল ইসলাম রাজা

ডিম উৎপাদকদের দাবি, চার ধাপে হাত পরিবর্তন হওয়ায় মধ্যসত্ত্বভোগীরা বাড়িয়ে দিচ্ছে দাম। তারা বলছেন, খামারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হয় সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ টাকায়।

পোল্ট্রি ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এই চার হাত কে? খামারি নিজে বিক্রি করে একজন। তার কাছে আড়ৎদার কেনেন, তিনি একজন। আড়ৎদারের কাছে একজন ছোট ব্যবসায়ী কেনেন, তিনি আরেকজন। এরপর তিনি একটি দোকানে দেন, তিনি আরেকজন। এই হলো চারজন। পাঁচ নম্বর হলেন একজন ভোক্তা। এই চারজন মানুষ কিন্তু এই চেইনের মধ্যে প্রফিটটা করে।’

অবশ্য বাড়তি লাভের অভিযোগ অস্বীকার করছেন আড়ৎদাররা। তাদের দাবি, বড় ফার্মগুলো বেশি দাম রেখে পাকা রশিদ দেয় না।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, ‘কখনও কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা করপোরেট কেউ বলে নাই যে আপনি এভাবে এভাবে ব্যবসাটা পরিচালনা করেন। আমরা আসলে আমাদের মত করেই ব্যবসাটা পরিচালনা করছি। তবে এখানে কোনো অসততা নেই।’

এদিকে, আগামী বুধবার থেকে পাকা রশিদ ছাড়া ডিম বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটির মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা আগামী ১৬ তারিখ থেকে, আমরা তাদের (ব্যবসায়ী) কাছ থেকেই রিপোর্ট নেব। এবং আমাদের একদম খুচরা পর্যায়ে যে অভিযানগুলো হবে সেখানে পাকা রশিদ যদি না হয় তাহলে এটার জন্য আমাদের আইনে, ভোক্তার আইনে যে ব্যবস্থা আছে, কৃষি বিপণন আইনে যে ব্যবস্থা আছে সেই হার্ড লাইনে আমরা যাচ্ছি।’

এদিকে, দাম নিয়ন্ত্রণে সকালে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ডিমের আড়তে অভিযান চালায় র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। কেনাবেচার রশিদ না থাকায় ১৭ আড়তে প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।