‘সেমাই-জর্দা খাওয়া নয়, সালামি উঠানোই ছিল শৈশবের আসল আনন্দ’ - News Portal 24
ঢাকাSaturday , ১ জুলাই ২০২৩

‘সেমাই-জর্দা খাওয়া নয়, সালামি উঠানোই ছিল শৈশবের আসল আনন্দ’

মু. আব্দুল্লাহ আল নাঈম
জুলাই ১, ২০২৩ ৮:৩৪ অপরাহ্ন
Link Copied!

শৈশব কিংবা কৈশোরে এমন একটা সময় ছিল যখন ঈদ মানে নতুন জামা, নতুন জুতা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সালামি আদায় করা। ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজ পড়ে কোনমতে বাড়িতে হালকা কিছু খেয়েই বের হয়ে যেতাম নানা-নানী, দাদা-দাদী আর চাচার বাসায়। সেখানে গেলে সেমাই জর্দা, পোলাও কোরমা খেতে দিতো। তখন সেগুলো কোথাও খেতাম, আবার কোথাও খেতাম না। তবে সেমাই-জর্দা, পোলাও কোরমা খাওয়াটা মূল লক্ষ্য ছিলনা। মূল লক্ষ্য ছিল ঈদ সালামি নেয়া।

এই দৃশ্য শুধু আমার একার বেলায়ই ঘটতো না, দলবেঁধে পাড়ার ছেলেমেয়েদের সবাইকে এমনটিই করতে দেখা যেত। তখন খুবই আনন্দ হতো। আনন্দময় ছিল তখনকার দিনগুলো। তারপর সালামির টাকা উঠিয়ে দোকানে গিয়ে বাঁশি কেনা, কোক ও প্যাটিস কিনে খাওয়া, আর দলবেঁধে পাড়ার ছেলেমেয়েরা এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে ঘুরে সেমাই জর্দা খাওয়া ছিল একটি রেওয়াজ। এরপর ঈদ রাতের বড় আনন্দ ছিল ৭দিন ব্যাপী টিভিতে আনন্দমেলা ও ঈদের নাটক দেখা।

কিন্তু আজ সেই দিনগুলো খুবই মিস করি। সময়ের পরিক্রমায় বড় হয়ে গেছি, কারো চাচা- কারো মামা হয়েছি। এখন ছোট ভাগিনা-ভাগ্নি, ভাতিজা-ভাতিজিকে এখন সালামি দিতে হয়, দিতেও ভালো লাগে।

আরেকটি মজার ঘটনা শেয়ার করলে বলতে হয়, গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় আজ ঈদের দিনও ছিল বৃষ্টিস্নাত। ঝুম বৃষ্টি হয়েছে সকালে। কোরবানির গরু জবাই করতে এবং গোস্ত বানাতে ভালই বেগ পেতে হয়েছে মানুষের। বাড়ির নিচতলায় যাদের খালি রয়েছে, তারাই কেবল সুবিধা মতো কোরবানির মাংস বানানোর সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া বাকিদের বৃষ্টিতে ভিজে কষ্টই হয়েছে বটে।

পুরনো দিনের স্মৃতি ছাপিয়ে এখন ডিজিটাল সময়ে চলে এসেছি আমরা। ঈদ সালামির লেনদেন এখন বিকাশ, নগদ, রকেটে। আগের মত আত্মীয় স্বজনদের বাসায় যাওয়া, খোঁজখবর নেয়া, ঈদ উপহার বিনিময় করা, সমবয়সীদেরকে ঈদ মোবারক লিখে হাতে কার্ড বানিয়ে বন্ধুদের দেওয়াই ছিল রীতি। বড়দের সালাম করা ও অল্পবিস্তর সালামি পাওয়ার রেওয়াজটাও কেন যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। এর বিপরীতে আমরা এখন মেসেঞ্জার, টেলিগ্রাম, হোয়াটস অ্যাপে শুভেচ্ছা জানিয়েই শেষ করছি।

লেখক:

মু. আব্দুল্লাহ আল নাঈম

জেনারেল সেক্রেটারি,
তা’মীরুল মিল্লাত সাংবাদিক ফোরাম।