কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক না থাকায় প্রায় তিন বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্স সেবা না পাওয়ায় চালকের দাবীতে সচেতন নাগরিক সমাজের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্যোগে রবিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় ফুলবাড়ী হাসপাতালের মূল গেট ও ফুলবাড়ী টু বালারহাট সড়কে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতারাসহ প্রায় তিন শতাধিক মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক নুরে আলম কবির লেবু, ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি এমদাদুল হক মিলন, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহাবুব হোসেন, শিশু সাহিত্যিক ও গীতিকার তৌহিদ-উল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান ও স্বপ্নসিঁড়ি সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি মোশারফ মন্ডল প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে আল্ট্রাসসনোগ্রাম, এক্স-রেসহ ইসিজি সেবা পাচ্ছেন না রোগীরাও। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন রোগীসহ তাদের স্বজনদের। এসব ভোগান্তি সহ্য করেই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধ্য হয়ে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়ার দ্বিগুন টাকা ব্যয় করে মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকারসহ বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে কুড়িগ্রাম-রংপুর-মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালে ছুঁটছেন স্বজনরা। টানা ২ বছর ৭ মাস অতিবাহিত হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিতে না পাড়ায় মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স চালকের দাবী জানান এবং সেই সাথে ডাক্তার সংকটের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে সৃ-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সামছুন্নাহারসহ অপর একজন ডাক্তারের সরকারি কোয়াটারে চুরি সংঘটিত হয়। কোয়াটারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চুরির সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। চুরির নির্দেশ দাতা হিসাবে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলী (৪৯) কে আটক করা হয়। পরে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়ের করে তাদেরকে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। চুরির নির্দেশ দাতা হিসাবে আটক অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলীকে ১৩/০১/২১ তারিখেই সাময়িক বরখাস্ত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে গ্যারেজে তালাবদ্ধ অবস্থায় অযত্নে পরে আছে অ্যাম্বুলেন্সটি।
২০২১ সালের ১১ই এপ্রিল অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলী কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসলেও বরখাস্ত থাকা অবস্থায় ওই চালক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানোর নিয়ম নেই বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুমন কান্তী সাহা জানিয়ে বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ বিশেষজ্ঞসহ চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে স্থানীয় প্রশাসন, এমপি মহাদয়সহ উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।