বাংলা অনুচ্ছেদ : যৌতুক প্রথা
যৌতুক মানে অর্থ বা সম্পত্তি যা একজন কনে তার স্বামীর কাছে বিয়ের শর্ত হিসেবে নিয়ে আসে। অর্থ উপার্জনের এই প্রথা আমাদের সমাজে একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এটি কেবল লজ্জাজনক। এই অপশক্তি আমাদের সমাজের মূলে কাজ করছে। দরিদ্র পিতামাতার জন্য এটি একটি অসহনীয় বোঝা। এই খারাপ অভ্যাসের পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এই প্রথাটি আসলে হিন্দু সম্প্রদায় থেকে এসেছে যারা কনেদের অনেক মূল্যবান জিনিস দেয় কারণ তারা তাদের পিতামাতার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী নয়। লোভী মানসিকতার লোকের একটা অংশ আছে। তারা বরের বাবা-মায়ের উপর চাপ দিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে চায়। তারা মনে করে কনের অভিভাবকদের কাছ থেকে যৌতুক দাবি করা এবং নেওয়া তাদের অধিকার, কারণ তারা বর-কনেদের শিক্ষিত করতে অনেক ব্যয় করেছে। তাই অনেক ক্ষেত্রেই দরিদ্র বাবা-মায়েরা তাদের মেয়েদের বিয়ে দিতে বড় সমস্যায় পড়েন। এভাবে এই ব্যবস্থা সমাজকে প্রভাবিত করে। এই অভ্যাস মানুষের মানসিকতা নষ্ট করে। এটি অর্থের প্রতি লোভ এবং সামাজিক অস্থিরতার জন্ম দেয়। ভালো মানসিকতার কোনো মানুষ এই কুপ্রথা সমর্থন করতে পারে না। নারীও পুরুষের মতোই মানুষ। সমাজে তাদের সকলের সমান অধিকার রয়েছে। আমরা এগুলোকে পণ্যের মতো কিনতে বা বিক্রি করতে পারি না। তাই এই মন্দ কাজ যেন গোটা সমাজকে ধ্বংস করে না দেয়। যৌতুক বিরোধী প্রচারাভিযান মানবিক কর্মকান্ডের সকল ক্ষেত্রে জোরদার করতে হবে, বিশেষ করে গণমাধ্যম যৌতুক প্রথার কুফল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে প্রয়োগের জন্য আমাদের সরকারকে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। তাহলেই এই সামাজিক অভিশাপ দূর হবে এবং আমরা যৌতুক মুক্ত সমাজ আশা করতে পারি।