১২ জুন সোমবার মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ৬৫নং চকহরিচরন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে রুনা নামক বিষয় নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং অবহেলিত এই শিশুদের প্রতি মানুষকে সচেতন করতে প্রকাশিত হয়েছে বই ‘আমার নাম রুনা’। বেসরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান নিকেতন ফাউন্ডেশন এবং নেদারল্যান্ডসের প্রতিষ্ঠান বিবলিওনেফ যৌথভাবে বইটি প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে সেরিব্রাল পালসি বা জন্মলগ্ন থেকে মস্তিষ্কে ক্ষতজনিত কারণে প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে ডাচ নাগরিক এন্টিনিও টারমোসাইজে কাজ করছেন। তার অভিজ্ঞতায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের অনেকেই ‘পাগল’ বলে থাকেন। এসব শিশুকে অনেক সামাজিক নির্যাতন, নেতিবাচক মন্তব্যসহ ব্যাপক অত্যাচার সহ্য করতে হয়। অথচ সঠিকভাবে যত্ন নিলে এই শিশুদের ভবিষ্যতও উজ্জ্বল হতে পারে।
অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ডস থেকে আগত অতিথি বলেন, শুধু বাংলাদেশই নয়, নেদারল্যান্ডসসহ সারাবিশ্বেই এই ধরনের শিশুদেরকে বিরূপ পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়। তাই এই শিশুদের প্রতি মানুষকে সচেতন করা এবং এই শিশুদের জন্য ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।
‘আমার নাম রুনা’ বইটিতে মূলত রুনা নামে বাংলাদেশি এক প্রতিবন্ধী শিশুর চরিত্র বাস্তব জীবনের চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বইতে রুনা বলছে, ‘হ্যালো, আমি রুনা। আমি সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত এবং বাংলাদেশে বাস করি। আমি স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারি না এবং স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি না। তাই লোকে আমাকে ইডিয়ট বলে গালি দেয়। আমার মা-বাবাও আমাকে গালি দেয়। এখন আমি একটি বইয়ের মূল চরিত্রে কথা বলছি, যেখানে আমার সাথে এই সমাজ যেসব অনাচার করছে তা বলার চেষ্টা করেছি। আশা করব, আমার এই বইটি এই সমাজে প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি বৈষম্য প্রতিরোধে সাহায্য করবে এবং ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করবে।’ তিনি প্রতিটি স্কুলে এই বইটি পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানান।
এসময় তিনি আমার নাম রুনা এর শিক্ষকদের একটি কর্মশালা উপস্থিত থেকে বক্তব্য দান করেন। তার সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডিআরএর প্রকল্প ম্যানেজার ডালিয়া খাতুন, চকহরিচরন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ সাইফুর রহমান, উপজেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলাম সহ অনেকেই ।