সিলেটের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বছর জুড়েই সিলেটে পর্যটকদের ঢল নামে। সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে অন্যতম সিলেটের জাফলং। সিলেটের জাফলং প্রকৃতি কন্যা হিসাবে পরিচিত। খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে দৃষ্টিনন্দন।
সীমান্তের ওপারে ইন্ডিয়ান পাহাড় টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম-ধারায় প্রবহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেল-পানি, উঁচু পাহাড়ে গহীন অরণ্য ও শুনশান নীরবতার কারণে পর্যটকদের দারুণভাবে মোহাবিষ্ট করে। এসব দৃশ্যপট দেখতে প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে।
সারিবদ্ধ চা বাগান, চারদিকে সবুজের সমারোহ, উঁচু-নিচু পাহাড়-টিলা, গহীন অরণ্য আর ঝর্ণাধারা। এছাড়া আছে লালা খাল, খাসিয়াপুঞ্জি, রাতারগুল, লোভাছড়া, পানতুমাই, বিছনাকান্দি।
উঁচু পাহাড়, স্বচ্ছ জল, রকমারি নুড়ি পাথরের সমন্বয়ে গড়া আসাম সীমান্তবর্তী জাফলং। যান্ত্রিক কোলাহল ছেড়ে একটু প্রশান্তির জন্য অনেকেই আসেন এখানে।
সিলেট নগরী থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং এর অবস্থান। জাফলংয়ে শীত ও বর্ষা মওসুমের সৌন্দর্যের রূপ ভিন্ন। বর্ষায় জাফলং এর রূপ লাবণ্য যেন ভিন্ন মাত্রায় ফুটে উঠে।
সিলেটের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বছর জুড়েই সিলেটে পর্যটকদের ঢল নামে। সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে অন্যতম সিলেটের জাফলং।
কী দেখবেন
এখানে গেলে কাফনা নদী ও সারি নদীর ডান পাশে অরণ্যঘেঁরা টিলা দেখা যায়। নদীর স্বচ্ছ পাথরের পানি আপনাদের হৃদয় কেড়ে নেবে। এছাড়া তামাবিলের জিরোপয়েন্ট থেকে পাহাড়ের মধ্যে ওপারের একটি সেতু আপনাদের আকৃষ্ট করবে। জাফলং নদী থেকে ওপারের ঢাউকী বাজারের দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। তবে নদী পেরিয়ে আদিবাসী ‘খাসিয়া পুঞ্জি’তে গেলে আনন্দে নেচে উঠবে মন। পাথরের স্বর্গজাফলংয়ের চার পাশ পাথরে ভরপুর। তাই স্থানীয়রা জাফলংকে ‘পাথরের স্বর্গ’ বলে থাকেন। হয়তো শীতকালে এখানে ভ্রমণ করার আলাদা একটা মজা পেতে পারেন। কারণ এর প্রাকৃতিক দৃশ্য মন ভোলানোর মতো।
কিভাবে যাওয়া যায়
ঢাকার কমলাপুর ও ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে করে সিলেট যাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন পরিবহনের বাস নিয়মিতই যায় ঢাকা থেকে।
সিলেট থেকে যাতায়াত
সিলেট থেকে আপনি বাস/ মাইক্রোবাস/ সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় যেতে পারেন জাফলং এ। সময় লাগবে ১ ঘন্টা হতে ১.৩০ ঘন্টা। সিলেটে থেকে বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা বা লেগুনায় যাওয়া যায় জাফলংয়ে। জাফলং যেতে জনপ্রতি বাসভাড়া পড়বে ৮০ টাকা। যাওয়া-আসার জন্য মাইক্রোবাসের ভাড়া পড়বে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া পড়বে ১০০০-১২০০ টাকা। সিলেট শহরের যে কোনো অটোরিকশা বা মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়া যাবে জাফলংয়ে।
থাকার ব্যবস্থা
গেস্ট হাউজ ও রেস্ট হাউজের তথ্য:
১। জেলা পরিষদের রেস্ট হাউজ, উপজেলা হেড কোয়ার্টার।
২। নলজুরী রেস্ট হাউজ- নলজুরী, জাফলং।
৩। গ্রীন পার্ক রেস্ট হাউজ, নলজুরী, জাফলং।
৪। সওজ বাংলো, জাফলং।
খাবার হোটেল:
জাফলং এ পর্যটকদের খাওয়ার জন্য বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
১। পর্যটন রেস্তোরা,জাফলং, তামাবিল জিরো পয়েন্ট।
২। পিকনিক সেন্টার রেস্টুরেন্ট,জাফলং বল্লাঘাট।
৩। ক্ষুধা রেস্টুরেন্ট, জাফলং বল্লাঘাট।
এছাড়াও সিলেট শহরে অসংখ্য হোটেল বা রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে পর্যটন মোটেল, হেরিটেজ, হিল টাউন, হোটেল পলাশ, সুপ্রিম এবং নাজিমগড় রিসোর্ট অন্যতম।