তরমুজ স্বাদে ও পুষ্টিতে ভরপুর একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। রসাল এই ফলটির খোসা যতটা শক্ত তার ভেতরের অংশ ততটা নরম। গ্রীষ্মে অনেকেই তাদের পিপাসা মেটাতে এই ফলটি বেছে নেন।
তরমুজে থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১ ও বি ৬, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম, লাইকোপেন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। তরমুজে ক্যালোরির পরিমাণ আম, কাঠাল ও লিচু ইত্যাদি গ্রীষ্মকালীন ফলের চেয়ে অনেক কম। প্রায় ৯১ ভাগ পানি থাকে, কার্বহাইড্রেট থাকে ৭.৫ শতাংশ। কোনো ফ্যাট বা প্রোটিন এই ফলে থাকে না। ১০০ গ্রাম তরমুজে চিনির পরিমাণ থাকে মাত্র ৬.২ গ্রাম।
এক বাটি তরমুজে থাকে ১২ গ্রাম কার্বহাইড্রেট। এই কার্বহাইড্রেটের বেশির ভাগই হলো- গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ ও সুক্রোজ। সামান্য খাদ্য আঁশও থাকে এই তরমুজে। এতো উপকার থাকা স্বত্ত্বেও স্বাদে মিষ্টি হওয়ার কারণে অনেক ডায়াবেটিস রোগীই তরমুজ খেতে ভয় পান।
আসলে কোন কোন খাবার খেলে রক্তে শর্করা কতটা বাড়ে, তা নির্ভর করে খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোডের উপর। তরমুজ ফল বা জুস দুই ভাবেই খাওয়া যায়। তবে ফ্রেশ তরমুজের বিচি ফেলে খেলে তার স্বাস্থ্যগত মান অক্ষুণ্ণ থাকে।
তরমুজ মিষ্টি হওয়ায় অনেক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা ভয় পান তরমুজ খাওয়ার ব্যাপারে। আবার অনেকে চিন্তায় থাকেন খেলেও কতটুকু খাবেন?
একজন ব্যক্তি তাদের খাদ্য তালিকায় যেসব খাবার বা ফল যোগ করেন তাতে তাদের পুষ্টিকর ফ্যাট এবং প্রোটিনের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত। ফ্যাট এবং প্রোটিন রক্ত প্রবাহে চিনির শোষণকে ধীর করতে সাহায্য করে। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সহায়ক হতে পারে।
অন্যান্য ফলের মতো, তরমুজ খাওয়া ভালো এবং পরিমাণে খাওয়া উচিত। ডায়াবেটিক রোগী এই ফলকে সালাদ হিসাবে খেতে পারেন। তরমুজ খাওয়ার সময়, সুগার রোগীর উচ্চ জিআই (GI) যুক্ত খাবারের সঙ্গে না খাওয়াই ভালো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বরং, বাদাম, বীজ এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে খাওয়া ভালো।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজিও রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়। যদিও সব ফলেই কমবেশি প্রাকৃতিক শর্করা থাকে। তবুও ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা অবশ্যই পরিমাপ মেপে খাবেন। জিআই স্কোরে ফলের অবস্থান সম্পর্কেও সচেতন হওয়া উচিত।