পুষ্টি ঘাটতি পূরণে জনগণকে মুরগির পা রান্না করে খাওয়ার পরামর্শ! – News Portal 24
ঢাকাTuesday , ২১ মার্চ ২০২৩

পুষ্টি ঘাটতি পূরণে জনগণকে মুরগির পা রান্না করে খাওয়ার পরামর্শ!

নিউজ পোর্টাল ২৪
মার্চ ২১, ২০২৩ ৮:৪৯ অপরাহ্ন
Link Copied!

ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে নীল নদের দেশ মিশর। পরিস্থিতি এমন যে অনেক মানুষ পরিবারের জন্য প্রতিদিনের খাবার পর্যন্ত জোগাড় করতে পারছে না। তাই পুষ্টি ঘাটতি পূরণে জনগণকে মুরগির পা রান্না করে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দেশটির সরকার। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মুরগির পা উচ্চ-প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। কিন্তু মিসরে সাধারণত লোকজন মুরগির পা খায় না, ফেলে দেয়। সেগুলো রাস্তার কুকুর-বিড়ালের খাবারে পরিণত হয়। তাই সরকারি পরামর্শে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার।

মিসরের বেশিরভাগ মানুষ পণ্য কেনার সক্ষমতা হারিয়েছেন। মাত্র কয়েক মাসে বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বেড়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের জন্য রান্নার প্রধান উপকরণ তেল এবং পনিরও বিলাসিতা হয়ে গেছে। ফলে মিসরের গিজা মার্কেটে মুরগি বিক্রেতার পাশে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তিকে বলতে দেখা যায়, ‘হ্যাঁ, খোদা, আমাদের মুরগির পা খাওয়ার মতো অবস্থায় নিয়ে ফেলো না।’

টানা দুই বছর কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কার পরপর ইউক্রেন যুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বের অর্থনীতি। এই সময়ে হু হু করে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। মূল্যস্ফীতি হয়েছে আকাশছোঁয়া। মার্চ মাসে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি ৩০ শতাংশের সামান্য ওপরে রয়েছে। মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় সবচেয়ে ভুগতে থাকা দেশগুলোর একটি মিসর ।

তিন সন্তানের মা ওয়েদাদ (৬০) বলেন, ‘আমি হয়ত মাসে একবার মাংস খেতে পারি। এখন যা একদমই কিনতে পারছি না। আমি সপ্তাহে একবার মুরগি কিনি। এখন তো একটি ডিমের দামও ৫ মিসরীয় পাউন্ড (০.১৬ মার্কিন ডলার) হয়ে গেছে।’

এক বছর আগেও ওয়েদাদ তার মাসিক অবসরভাতা পাঁচ হাজার মিসরীয় পাউন্ড দিয়ে বেশ সাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতেন। কিন্তু অনেক মিসরীয় নাগরিকের মতো এখন তাকেও মাস শেষে বাজারের হিসাব মেলাতে হচ্ছে।

ওয়েদাদ বলেন, ‘একজন বিক্রেতা মুরগির হাড় ছাড়া মাংস এক কেজি ১৬০ মিসরীয় পাউন্ড বলছে। বাকিরা তো ১৭৫, ১৯০ এমনকি ২০০ মিসরীয় পাউন্ডও চাইছে। মুরগির রান বিক্রি হচ্ছে ৯০ মিসরীয় পাউন্ড কিলো। এমনকি মুরগির হাড় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। মুরগির পায়ের দাম ২০ মিসরীয় পাউন্ড।’

মিসরের জনসংখ্যা ১০ কোটির বেশি। দেশটি মারাত্মকভাবে আমদানি করা খাদ্যপণ্যের ওপর নির্ভরশীল, যা সেখানে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিস অবশ্য অর্থনৈতিক এ সংকটের জন্য ২০১১ সালের আরব বসন্তের জেরে সেদেশে হওয়া বিক্ষোভ এবং জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন। পাশাপাশি দায়ী করেছেন কোভিড-১৯ মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধকে।