মায়ের জন্য ইফতার নিয়ে ফেরা হলো না প্রবাসী সুমনের - News Portal 24
ঢাকাWednesday , ৮ মার্চ ২০২৩

মায়ের জন্য ইফতার নিয়ে ফেরা হলো না প্রবাসী সুমনের

নিউজ পোর্টাল ২৪
মার্চ ৮, ২০২৩ ১:২৯ পূর্বাহ্ন
Link Copied!

প্রবাসী সুমন মাত্র ১৫ দিন আগে কাতার থেকে এসেছেন। পুরান ঢাকার চূড়াইটোলার বাসিন্দা তিনি। গুলিস্তানের একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনার সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন সুমন। বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মায়ের জন্য ইফতারি কিনতে। বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৫ জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এসেছে। এদের মধ্যে একটি লাশ কাতার প্রবাসী সুমনের।

ঢাকা মেডিকেলের সামনে কথা বলছিলেন প্রবাসী সুমনের ভাড়া বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান হাবিব। তিনি বলেন, সুমনের পরিবার আমার বাসায় ভাড়া থাকে। সে ১৫ দিন হলো কাতার থেকে দেশে ফিরেছে। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই সুমনের সঙ্গে আমার কথা হয়। সে বলল, তার মায়ের জন্য ইফতারি আনতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকট শব্দে দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর খোঁজ নিতে আমরা ঢাকা মেডিকেলে আসি। এসে দেখি সে মারা গেছে। তার বাবা-মার একটাই দাবি, তাদের ছেলের যেন ময়নাতদন্ত না করা হয়। মৃত্যুর খবর শুনে নিহত সুমনের মা-বোন ঢাকা মেডিকেলে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে গুলিস্তানে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর হতাহতদের দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনা আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আহত মানুষদের নিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ভেতরে প্রবেশ করছে। জরুরি বিভাগের সামনে থেকে শুরু করে বাইরের সড়ক পর্যন্ত আহত এবং নিহতদের স্বজনদের আহাজারি চলছে।

ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তার ও নার্স থেকে শুরু করে হাসপাতালের কর্মীরা হতাহতদের সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকা। দেয়াল ভেঙে এসে পড়ে রাস্তায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোও। ভেঙে পড়েছে অনেক ভবনের কাঁচ। বাসযাত্রী থেকে শুরু করে পথচারী পর্যন্ত বিস্ফোরণের আশেপাশে থাকা সবাই হতাহত হয়েছেন। ঘটনার পর রিক্সা, ঠেলাগাড়ি, ট্রাক, গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সসহ যে যেভাবে পারছে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক, সাবেক ইউএনও মনজুর কারাগারে

ফায়ার সার্ভিস বলছে, ভবনটি বাণিজ্যিক হওয়ায় ভেতরে অনেকের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভবনটির ভেতরে আরও আহত কেউ আটকা পড়েছে কি না, তা খুঁজে দেখছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-মিডিয়া) শাহজাহান সিকদার জানান, ফায়ার সার্ভিসের ৭ ইউনিট ভবন থেকে অনেককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।

ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাজাহান শিকদার জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে গুলিস্তান বিআরটিসি কাউন্টারের দক্ষিণ পাশে ৫তলা ভবন (নিচতলায় সেনিটারি দোকান, বাকি ফ্লোরগুলো ব্র্যাক ব্যাংকের অফিস) এবং তার পাশের ৭ তলা একটি সেনেটারি মার্কেট ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো ভবনই ধসে পড়েনি।