বিশ্বের এমন স্থান রয়েছে, যেখানে নারীরা একবারেই প্রবেশ করতে পারেন না। এই স্থানগুলোতে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। অথচ পর্যটন স্থান হিসেবে এসব জায়গা বেশ জনপ্রিয়। প্রতিবছর এই স্থানগুলোতে হাজারো পর্যটক বেড়াতে যান। এই স্থানে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করার আগে চিন্তা ভাবনা করে নেবেন। জেনে নিন কোন কোন স্থানে নারীদের প্রবেশ নিষেধ-
ওকিনোশিমা দ্বীপ, জাপান
জাপানের ওকিনোশিমা নামে একটি সুন্দর দ্বীপ রয়েছে। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদাও পেয়েছে এই দ্বীপ। এখানে বসবাস করেন শিন্তো ঐতিহ্যবাহী সন্ন্যাসীরা। তাদের নির্দেশেই এই দ্বীপে নারীদের প্রবেশ নিষেধ। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, শুধু সন্ন্যাসীদের এলাকাই নয়, গোটা দ্বীপেই নারীদের প্রবেশ নিষেধ।
ইরানি স্পোর্টস স্টেডিয়াম
ইরানের ক্রীড়া স্টেডিয়ামে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর এখানে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ইরান সরকারের বিশ্বাস যে, পুরুষদের শর্টস্ পরে খেলার দৃশ্য মহিলাদের দেখা উচিত নয়। এছাড়াও অনেক সময় পুরুষরা খেলা চলাকালীন অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে নারীরা সামনে থাকলে বিব্রত হতে হয়।
কার্তিকেয় মন্দির, পুষ্কর, রাজস্থান
রাজস্থানের পুষ্করে ভগবান কার্তিকেয় বা কার্তিককে ব্রহ্মচারী রূপে পূজা করা হয়ে থাকে। এই মন্দির প্রাঙ্গণে নারীদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, মন্দিরে প্রবেশকারী নারীরা শ্রদ্ধা ভরে ভগবান কার্তিকের পূজা দিলেও তিনি নাকি তাদের আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপ দেন। ঈশ্বরের এই অনুভূত আগ্রাসনে দেখার পর থেকেই মন্দিরে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
বার্নিং ট্রি ক্লাব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্নিং ট্রি ক্লাবটি একটি গল্ফ ক্লাব। ক্লাবটি তৈরি হয়েছে শখের খেলোয়াড়দের জন্য। এখানে শুধুমাত্র পুরুষরা প্রবেশের অনুমতি পান। যেহেতু এই ক্লাবটি খুবই বিখ্যাত এবং এমনকি দেশের প্রেসিডেন্ট এবং বিচারকরাও এখানে গল্ফ খেলতে আসেন, তাই এখানে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
মাউন্ট এথোস, গ্রিস
উত্তর গ্রিসের মাউন্ট এথোস পর্বত এবং উপদ্বীপটিতে বসবাস করেন প্রায় ২ হাজার সন্ন্যাসী। এটি সন্ন্যাসীদের মঠ। আর এই পর্বত ও উপদ্বীপটিতে ১ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র নারীরা নন, এখানে প্রবেশ নিষেধ পশুদেরও। এর আগে একবার নারীরা প্রতিবাদ আন্দোলন করে উপদ্বীপে প্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিস্থিতি দেখে স্থানীয় সন্ন্যাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিশ্বাস করেন যে, নারীদের উপস্থিতি তাঁদের সম্প্রদায়ের সামাজিক জীবনধারা পরিবর্তন করে এবং তাদের আধ্যাত্মিক জ্ঞানের পথকে স্থবীর করে দেয়।
আয়াপ্পা মন্দির, শবরিমালা, কেরল
১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি নারী; যাদের ঋতুচক্র চলছে, তাদের কেরলের আয়াপ্পা মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ ছিল। অতীতে নাকি একবার ৩৫ বছর বয়সি এক মহিলা মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন। তখন সেখানকার পুরোহিত মন্দিরে শুদ্ধিকরণ অনুষ্ঠান করেন। বিষয়টি নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। বর্তমানে অবশ্য আদালতের নির্দেশে মন্দিরে প্রবেশ অনুমতি মিলেছে। যদিও আইন যাই বলুন, বাস্তবে মন্দিরের ভেতরে প্রবেশাধিকার নিয়ে ভয়ানক সমস্যা হয়ে থাকে।