পটুয়াখালীতে বেপরোয়া গতির কারণে বাস উল্টে এক শিশুর মৃত্যু, আহত ১৭ - News Portal 24
ঢাকাWednesday , ৮ মার্চ ২০২৩

পটুয়াখালীতে বেপরোয়া গতির কারণে বাস উল্টে এক শিশুর মৃত্যু, আহত ১৭

অনলাইন ডেস্ক
মার্চ ৮, ২০২৩ ৪:৫৭ অপরাহ্ন
Link Copied!

পটুয়াখালীতে বেপরোয়া গতির কারণে ইকোনো পরিবহনের একটি বাস উল্টে ওই বাসে থাকা ছয় বছরের শিশু রোজা বিনতে রিয়া মনি নিহত হয়েছে। শিশুটির মা-বাবা ও ভাইসহ আহত হয়েছেন আরও ১৭ যাত্রী। রিয়া মনির মা জেসমিন বেগমের (৩৫) পা কাটা যাওয়ায় ও ভাই জুনায়েদের (১৩) আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। আর বাবা রিয়াজউদ্দিন (৪০) পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বুধবার (৮ মার্চ) ভোররাত সোয়া চারটায় পটুয়াখালী সেতুর উত্তর প্রান্তে খলিশাখালির ঢালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ও সদর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের পটুয়াখালী মেডিকেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। বাসের চালক ও হেলপারও পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

আহত ওই বাসের যাত্রী পটুয়াখালী সদর উপজেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের ঠেঙ্গাই গ্রামের মোহাম্মদ গিয়াস (৩৫) জানান, গতকাল রাতে গাজীপুরের আব্দুল্লাহপুর থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে ইকোনো পরিবহনের বাসটি ছেড়ে আসে। শুরু থেকেই চালক বেপরোয়া গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন। বরিশালে আধাঘণ্টার বিরতির পরে পটুয়াখালী সেতুর কাছে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানকে অতিক্রমের সময় বাস চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ সময় বাসটি বাম দিক থেকে ডান দিকে টান করলে উল্টে যায়।

পটুয়াখালীতে বেপরোয়া গতির কারণে বাস উল্টে এক শিশুর মৃত্যু, আহত ১৭

পটুয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি বাসের আরেক যাত্রী নাজমুল ইসলাম (৩৫) জানান, বেপরোয়া গতির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ড্রাইভারকে পথে বারবার সাবধান করা হয়েছিল।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ব্রাদার রতন দে জানান, বাস দুর্ঘটনায় আহত মোট ১৮ জন ভোররাত সাড়ে চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে হাসপাতালে আসে। এরমধ্যে ছয় বছরের শিশু রিয়া মনি মারা যায়। মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়। তার মা জেসমিনের ডান পা কেটে যাওয়ায় হাঁটুর কাছ থেকে ফেলে দিতে হয়। তাকে এবং রিয়া মনির ভাই জুনায়েদকে (১৩) মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের সার্জারি মেল ওয়ার্ড থেকে জাকির হোসেন নামে আরেক আহত রোগীকে বরিশালের রেফার করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  স্ত্রী মোবাইলে ইন্টারনেট কেনায় অভিমানে যুবকের আত্মহত্যা

নিহত রিয়া মনির বাবা পটুয়াখালি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিয়াজুল ইসলাম (৪০) এখনো জানেন না তার মেয়ের মৃত্যুর এবং স্ত্রী ও ছেলের মুমূর্ষ অবস্থার খবর।

তার সাথে থাকা সহকর্মী জানান, সপরিবারে কুয়াকাটা ভ্রমণের জন্য ওই বাসে আব্দুল্লাহপুর থেকে উঠেছিলেন রিয়াজুল। একটি পোশাক কারখানায় চাকরির সুবাদে গাজীপুরে বসবাস করলেও রিয়াজুলদের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মুক্তারাম গ্রামে।

এদিকে হাসপাতালে রেকর্ড অনুযায়ী বাকি আহতদের বাড়ি ঢাকার সাভার, মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর, ভোলা, বরগুনার পাথরঘাটা, পটুয়াখালীর দশমিনা ও ইটবাড়ীয়া এলাকায়।

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, নিহত শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বাসটি দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, চালক ও হেলপার পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।