জ্বিন আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। মানুষের মতো তাদের মধ্যেও ভালো-মন্দ রয়েছে। কিছু দুষ্ট জিন আছে, যারা সুযোগ পেলেই মানুষের ক্ষতি করে বসে। কারণ সৃষ্টিগতভাবে ক্ষতি করার সামর্থ্য তাদের আছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে শয়তান ও দুষ্টু জ্বিনেরা সদলবলে জমিনে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্নভাবে মানুষের অনিষ্ট করার চেষ্টা করে বলে হাদিসে সত্যতা পাওয়া যায়। বিশেষত শিশু ও নারীরা শিকার হয় বেশি।
বদ নজর, বদ আছর ও ভয়ভীতি বিভিন্ন মাধ্যমে এ ক্ষতি করে তারা। তাই সময়টি খুব ঝুঁকিপূর্ণ। শিশুদের এ সময় ঘর থেকে বের হতে দিতে বারণ করেছেন নবীজি (স.)।
হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, إِذَا كَانَ جُنْحُ اللَّيْلِ أَوْ أَمْسَيْتُمْ فَكُفُّوا صِبْيَانَكُمْ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْتَشِرُ حِينَئِذٍ، فَإِذَا ذَهَبَ سَاعَةٌ مِنَ اللَّيْلِ فَخَلُّوهُمْ ‘যখন রাতের আঁধার নেমে আসবে অথবা বলেছেন, যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসবে তখন তোমরা তোমাদের শিশুদের আটকে রাখবে। কেননা এ সময় শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে। আর যখন রাতের কিছু অংশ অতিক্রান্ত হবে তখন তাদেরকে ছেড়ে দিতে পারো।’ (সহিহ বুখারি: ৩৩০৪)।
হাদিসের নির্দেশ না মানার কারণে অজান্তে আমরা শিশুদেরকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দিই। এরপর বিভিন্ন তাবিজ তদবিরের পেছনে ছুটোছুটি করি। অথচ নবীজির নির্দেশ মানলে এসব ঝামেলা থেকে নিরাপদ থাকা যায়। তবুও একান্ত প্রয়োজনে বের হতে হলে নিরাপত্তার দোয়া ইত্যাদি পড়ে আল্লাহর ওপর ভরসা করে বের হওয়া উত্তম। যেমন আয়াতুল কুরসি পড়া এবং ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়ে বের হওয়া।
এই দোয়াটিও পড়া যায়—أَعُوذُ بِاللهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ ‘আউজুবিল্লাহিল আজিম ওয়া বিওয়াজহিল কারিম ওয়া সুলত্বানিহিল কাদিমি মিনাশ শাইত্বানির রাঝিম।’
অর্থ: ‘আমি মহান আল্লাহর কাছে; তাঁর মহানুভব চেহারার কাছে; তাঁর অনাদি-অনন্ত কর্তৃত্বের কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাই।’
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নবীজির সকল সুন্নাহ মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।