শীতের সময়টাতে জয়েন্ট, পিঠ, ঘাড় এবং কোমর ব্যথা বেড়ে যায় অনেকের। আগে থেকে যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তারা তো আছেনই, অন্যদেরও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বয়স চল্লিশ পেরলেই এই ব্যথায় ভুগতে হয়। যদিও এই ধারণা এখন পুরোপুরি সত্যি নয়। যে কারো এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অনেক কারণেই কোমর ব্যথা হতে পারে। যেমন ধরুন- এক জায়গায় অনেকক্ষণ বশে আছেন। কিংবা শারীরিক বিভিন্ন কারণেও কোমর ব্যথায় ভুগতে পারেন। তবে ঘরোয়াভাবে কোমর ব্যথা থেকে কীভাবে প্রতিকার পেতে পারেন জেনে নিন-
>> প্রথমত এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না। জায়গা ছেড়ে মাঝে মাঝে উঠে পড়ুন। হাঁটাচলা করুন। শরীরচর্চা করুন। নরম মেট্রেস বা ফোমের বিছানায় কখনোই শোবেন না।
>> কোমরের যে জায়গায় ব্যথা সেখানে সেঁক দিলে যন্ত্রণা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া যাবে।
>> আদাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। এই পটাশিয়ামের অভাবের ফলে নার্ভের সমস্যা দেখা দেয়। এ জন্য প্রতিদিন নিয়মিত আদা খেলে কোমরের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
>> মেথি বীজের গুঁড়া দুধের সঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ব্যথার জায়গায় এই মিশ্রণ লাগালে উপকার পাবেন।
>> লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে। ভিটামিন ‘সি’ ব্যথা উপশমে খুবই কার্যকর। দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে কোমরের ব্যথা অনেকটাই কমতে পারে।
>> প্রতিদিন নিয়ম করে অ্যালোভেরা শরবত খান। এতে করে কোমরের ব্যথা থেকে অনেকাংশে মুক্তি মিলবে।
মেনে চলুন কিছু নিয়ম
>> ব্যথা বেশি হলে ৭ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিন।
>> ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। তবে ব্যথা বেড়ে গেলে ব্যায়াম বন্ধ রাখুন।
>> ব্যথার জায়গায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট গরম বা ঠাণ্ডা শেক দিন।
>> বিছানায় শোয়া ও ওঠার সময় যেকোনো একদিকে কাত হয়ে হাতের ওপর ভর দিয়ে শোয়া ও ওঠার অভ্যাস করুন।
>> নিচু জিনিস যেমন—পিঁড়ি, মোড়া বা ফ্লোরে না বসে চেয়ারে পিঠ সাপোর্ট দিয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন।
>> দাঁড়িয়ে বা চেয়ারে বসে রান্না করুন।
>> শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
>> সিঁড়িতে ওঠার সময় ধীরে ধীরে হাতল ধরে উঠুন।
>> ঝরণায় বা চেয়ারে বসে গোসল করুন।
>> শোবার সময় মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করুন।
>> বাইরে চলাফেরা করার সময় কোমরের বেল্ট ব্যবহার করুন। শোবার সময় ও ব্যায়াম করার সময় অবশ্যই বেল্ট খুলে রাখবেন।
>> ব্যথা তীব্র হলে উঁচু কমোডে বসে টয়লেট করুন।
>> চলাফেরায় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন ও রাস্তা এড়িয়ে চলুন এবং সামনের বা মাঝামাঝি আসনে বসুন। ব্যথা কমে গেলে নিয়মিত সমতল জায়গায় কমপক্ষে ঘণ্টাখানেক হাঁটুন।
যা করবেন না
>> ঘাড় নিচু করে কোনো কাজ করবেন না।
>> কোনো ধরনের মালিশ করবেন না।
>> দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না। এক ঘণ্টা পর পর অবস্থান বদলান।
>> হাই হিলযুক্ত জুতা ব্যবহার করবেন না।
>> ফোমের বিছানায় শোবেন না; শক্ত ও সমান বিছানায় শোবার অভ্যাস করুন।
>> ভারী ওজনের বোঝা বহন করবেন না।
>> পেট ভরে খাবেন না; প্রয়োজনে অল্প অল্প করে বারবার খান।