বাবার ইচ্ছা পূরণে এক টাকায় রোগী দেখেন ডাক্তার সুমাইয়া! - News Portal 24
ঢাকাMonday , ৯ জানুয়ারী ২০২৩

বাবার ইচ্ছা পূরণে এক টাকায় রোগী দেখেন ডাক্তার সুমাইয়া!

নিউজ পোর্টাল ২৪
জানুয়ারী ৯, ২০২৩ ৪:০২ অপরাহ্ন
Link Copied!

নিত্যপণ্যের উচ্চ মূল্যের বাজারে একশত টাকা কিংবা এক হাজার টাকা দিয়েও যখন কিছুই জোটে না সেই সময়ে এক টাকায় মিলছে চিকিৎসা সেবা। রোগী দেখছেন এমবিবিএস পাস করা চিকিৎসক। শুনতে অবাক লাগলেও রাজশাহীতে এক টাকার ভিজিটেই মিলছে চিকিৎসা। সময় নিয়ে রোগীর সমস্যা ও অসুবিধার বিবরণ জেনে প্রেসক্রিপশনের পাশাপাশি পরামর্শও দিচ্ছেন এই নারী চিকিৎসক।

২০১৫ সালে রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন সুমাইয়া। বড় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন মেডিকেল ভর্তির। ভাগ্যের নির্মমতায় সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেলেও বুনতে থাকেন স্বপ্নের জাল। এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে। সম্প্রতি এমবিবিএস পাশ করে ইন্টার্ন শেষ করেছেন তিনি। প্রাইভেট একটি ক্লিনিকে চাকরির পাশাপাশি বিসিএস প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আর এর পাশাপাশি করছেন জনসেবা।

বাবার ইচ্ছা পূরণে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন রাজশাহীর মেয়ে সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল। নগরীর সাহেব বাজারে একটি ওষুধের দোকানে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। সেখানেই তিনি প্রতি শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন।

২০১৫ সালে রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সুমাইয়া। বড় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন মেডিকেল ভর্তির। ভাগ্যের নির্মমতায় সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেলেও বুনতে থাকেন স্বপ্নের জাল। এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে। সম্প্রতি এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্ন শেষ করেছেন তিনি। প্রাইভেট একটি ক্লিনিকে চাকরির পাশাপাশি বিসিএস প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আর এর পাশাপাশি করছেন জনসেবা।

এ বিষয়ে সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল বলেন, মূলত আমার বাবার ইচ্ছে ছিল যে আমি যেন জনসেবামূলক কিছু একটা করি। ফ্রিতে মানুষের ট্রিটমেন্ট দেওয়া বা এরকম কিছু করাতে চেয়েছিলেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় এই জনসেবামূলক কাজটি আমি শুরু করেছি। ইচ্ছে আছে, যতদিন আল্লাহর রহমতে বেঁচে থাকি চালিয়ে যাওয়ার।

সবে পাঁচ দিন হচ্ছে রোগী দেখা শুরু করেছি। লিফলেট বানানো হয়েছে এখনও বিলি করাই হয় নি। কেউ জানেই না, এক প্রকার এক্সাইটমেন্ট থেকে ফেসবুকে লিফলেটসহ একটা পোস্ট করেছিলাম। এতেই অনেকের নজরে পড়েছে বলেও জানান এই চিকিৎসক।

বাবার ইচ্ছা পূরণে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন রাজশাহীর মেয়ে সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল। নগরীর সাহেব বাজারে একটি ওষুধের দোকানে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। সেখানেই তিনি প্রতি শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন।

এই পোস্ট করার পর থেকে অনেকেরই কল পেয়েছি, অনেকে মেসেজও করেছে। অনেকে সাধুবাদ জানাচ্ছে, এগিয়ে যাওয়ার জন্য বলছে। এমনকি একজন শিক্ষক ফোন করে আমার বিস্তারিত শুনে জানতে চাইলেন আমার লক্ষ্য কি। বিসিএস প্রস্তুতির কথা বলতেই জানালেন, ‘তোমার যদি ইংলিশে প্রিপারেশন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তুমি নির্দিধায় আমাকে বলতে পারো।’ এসব শুনেও ভালো লাগছে বলেও জানান তরুণ এই চিকিৎসক।

ভবিষৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আল্লাহ দিলে যদি চান্স হয় আর দূরে কোথাও পোস্টিং হয় তাহলে সপ্তাহে অন্তত একদিন করে হলেও এখানে রোগী দেখবো। আর পোস্টিং যদি আশেপাশে কোথাও হয় তাহলে অন্তত সন্ধ্যার পর রেগুলার রোগী দেখা যাবে। তবে এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসবে কি না সেটা নিয়ে এখনও ভাবা হয়নি। তবে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসলে তখন ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কি করা যায়।

রোগীর ভিজিট এক টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে নারী চিকিৎসক বলেন, দি ফাইভ ফাউন্ডেশন’ নামে আমার একটা ছোট্ট অর্গানাইজেশন আছে। করোনার সময় থেকেই সংগঠনটির কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। আমরা মূলত সেখানে মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) নিয়ে কাজ করে থাকি। এছাড়াও শীতে শীতার্তদের শীতবস্ত্র প্রদান, কোরবানির ঈদে গরু কোরবানি করে গোশত বিলি করা, অসহায়দের অর্থ সহায়তা দিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, কিছু দুস্থ পরিবারে নিয়মিত খাবার সহায়তা দেওয়া, একটি এতিম বাচ্চার ভরণপোষণ দেওয়ার মতো অনেক কাজই ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে করা হয়। সেজন্য ওই সংগঠনের আয় হিসেবে এই এক টাকা নেওয়া হচ্ছে।

ডাক্তারদের বদনাম আছে, তারা কসাই, মানুষের টাকা খসায়। অন্তত সেটা ঘোঁচানোর জন্য এক টাকা ভিজিটের রোগী দেখার উদ্যোগটা ভাল। আমার মেয়েরা যেন জনসেবা অব্যাহত রাখতে পারে এবং সেবার মাধ্যমে রাজশাহীর লোক উপকৃত হতে পারে সেজন্য সকলের দোয়াও চান তিনি।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ডা. সানাউল হক মিয়ার সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, এটা একটা মহৎ উদ্যোগ। চমৎকার কাজ শুরু করেছে সুমাইয়া। ইয়াং জেনারেশনের কাছে এটাই তো আশা করি। খুবই প্রশংসা করার মতো একটা ভালো কাজ এটি। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে দেখা করবো, উৎসাহ যোগাবো। সে যে মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে সবারই উচিত হবে উৎসাহ দেওয়া। এতে সে অনুপ্রাণিত হবে।