বরিশালে সদ্যজাত শিশু মৃত্যুর হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য মতে, গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর মাসে এখানে সর্বোচ্চ ৪১৩ সদ্যজাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আগাম জন্ম, কম ওজন নিয়ে জন্ম, শ্বাসকষ্ট এবং খিঁচুনিতে এসব শিশুর মৃত্যু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এছাড়া বাল্য বিবাহ এবং মায়ের অপুষ্টিজনিত কারণকেও দায়ী করছেন তারা। শিশু মৃত্যু নিয়ন্ত্রনে পারিবারিক সচেতনতা বাড়াতে তাগিদ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে জানা যায়, গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে এখানে ৯০ দিনে সর্বোচ্চ ৪১৩ জন সদ্যজাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ৩৯৯ জন, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ২৯৮ জন এবং জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ৩০৫ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসক ডা বিধান চন্দ্র বিশ্বাস বলছেন, সদ্যজাত শিশু মৃত্যুর জন্য গর্ভজাতকালীন মায়ের অযত্ন, বাড়িতে সন্তান জন্মদানের প্রবণতাসহ কয়েকটি কারণকে দায়ী করা যায়।
হাসপাতালের বিশেষায়িত নবজাতক ওয়ার্ডে মারাত্মক কম ওজন নিয়ে জন্মা শিশুদের এখানে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। ৪৬ বেডের এই ওয়ার্ডে শনিবার শিশু ছিলো ১২২ জন। অধিকাংশ শিশুর জন্ম আগাম হওয়ায় তাদের ওজন পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম। গত এক বছরে এই কেন্দ্রে অপুস্টির শিকার এমন ৯ হাজার শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে যাদের মধ্যে মারা গেছে ১৪১৫ জন শিশু।
এদিকে হাসপাতালের নবজাত সেবা কেন্দ্রে শিশু মৃত্যু বৃদ্ধির হারকে স্বীকার করে হাসপাতালের পরিচালক ডা এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলছেন, আগাম সন্তান জন্মের হার কমানো গেলে, মায়েদের সঠিক যত্ন-পরিচর্যা নিশ্চিত এবং বাড়িতে শিশু জন্মানোর প্রবণতা ঠেকানো গেলে কমানো সম্ভব এই শিশু মৃত্যুর হার।
বরিশালে সদ্যজাত শিশু মৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রনে আনতে হাসপাতাল কতৃপক্ষ বিশেষ ব্যাবস্থা নিতে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছন তিনি।