বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বিয়ে করে নববধূ বাড়িতে আনলেও বাসর করতে পারেননি ইরান খান নামে এক যুবক। বিয়ের দিনে দায়ের করা মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এ মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, উপজেলার বাগধা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল খালেক খানের ছেলে ইরান খান পাশের গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বাড়ি আনেন। বিয়ের বরযাত্রী ছিলেন ইরানের বড় বোনজামাই বরিশাল জেলা উত্তর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল মোল্লা। তিনি বাগধা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল খানের সঙ্গে বাগধা পশ্চিমপাড় বাজারে কথা বলেন।
এর জেরে এমদাদুলকে মারধর করেন ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান তালুকদার। ঘটনা জানতে পেরে আবুল মোল্লা বাজারে গিয়ে মশিউরকে এর কারণ জিজ্ঞেস করেন। পরে আওয়ামী লীগের ৩০-৪০ নেতাকর্মী আবুল মোল্লার শ্বশুরবাড়ি (বিয়েবাড়ি) গিয়ে তাঁকে খুঁজতে থাকেন, পুলিশেও খবর দেন। এ সময় তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। পুলিশ রাতেই যুবদল ও ছাত্রদলের তিন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় বাগধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোকলেচুর রহমান বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করেন। ওই মামলার আসামি নববিবাহিত ইরান খান ও তাঁর ভাই মিরান খান। রোববার রাতে ইরানের বাসর হওয়ার কথা থাকলেও তা পণ্ড হয়ে গেছে। দুই ভাই গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।
নববধূ জানান, স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করায় বাসররাত করতে পারেননি তাঁরা। তিনি ন্যায়বিচার দাবি করেন।
বাগধা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল খান জানান, আবুল মোল্লা শ্যালকের বিয়েতে এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলায় মশিউর রহমান ও মোকলেচুর রহমান সরদারের নেতৃত্বে তাঁকে মারধর করা হয়।
ইরান খানের বোন অ্যাডভোকেট কানন খানম জানান, তাঁদের পরিবারের কেউই রাজনীতিতে যুক্ত নয়। বড় বোনজামাই বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকায় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে।
মামলার বাদী মোকলেচুর রহমান বলেন, মশিউর রহমান তালুকদারকে মারধর করে আহত করেন এমদাদুল খান। মশিউর হাসপাতালে ভর্তি থাকায় তিনি মামলার বাদী হয়েছেন।
এ বিষয়ে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, মামলার পর এজাহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোন আসামি বিয়ে করেছে, তা জানা নেই।