ঢাকাMonday , ২ মে ২০২২

‘ত্রাণ চাইনি, নিখোঁজ স্বামীর সন্ধান চাই’

নিউজ পোর্টাল ২৪
মে ২, ২০২২ ১০:১৩ অপরাহ্ন
Link Copied!

৩ বছরে থামেনি স্বজনদের কান্না


ইমাম হোসেন হিমেল, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:: ত্রাণ চাইনি, নিখোঁজ স্বামীর সন্ধান চাই। কচি-কাঁচা বাচ্চাদের নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন তাদের। কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়ন এর চরচান্দুপাড়া গ্রামে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে সাগরে নিখোঁজ সাত জেলের সন্ধান তিন বছরেও মেলেনি। নিখোঁজ হওয়া জেলেদের অসহায় পরিবারগুলোর কান্না আজও থামেনি।

২০১৯ সালে ৮ নভেম্বর চরচান্দুপাড়া গ্রামের সাত জেলে সাগরে মাছ শিকারে গেলে ১০ নভেম্বর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে জাল-নৌকাসহ সাত জেলেই নিখোঁজ হয়।

তারা হলেন- চরচান্দুপাড়া গ্রামের মো. আলমাছ হাওলাদার, সোহেল শরীফ, সেরাজুল ইসলাম, আলমাছ সরদার, কাওসার, মুনসুর আলী ও নয়াপ্যাদা সাগরে মাছ শিকারে নিখোঁজ হয়।

তিন বছরেও নিখোঁজ হওয়া জেলেদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ হওয়া জেলেদের অসহায় পরিবার গুলো দীর্ঘদিন অভিভাবকদের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অসহায় পরিবারগুলো পাশে মাঝে মাঝে স্থানীয় মানবতার প্রতীক চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস হাত বাড়িয়েছে।

সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনিবুর রহমান অসহায় পরিবারগুলো মানবেতার কথা চিস্তা করে একটি করে সেলাই মেশিন ও কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন।

নিখোঁজ হওয়া জেলেরা সবাই এফবি হাসান নামক ট্রলারে মাঝিমাল্লা ছিলেন। বর্তমানে অসহায় পরিবারগুলো অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের পাশে বিত্তবান দানশীল মহানুভব ব্যক্তিদের সহযোগিতা হাত বাড়ানোর জন্য অসহায় পরিবারের পক্ষ থেকে নিবেদন করছেন।

নিখোঁজ হওয়া জেলে কাওসার এর তিন সন্তানের জননী মোসা. বিউটি বেগম বলেন, আমার স্বামী তিন বছর আগে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে তান্ডবে সাগরে নিখোঁজ হয়েছে। ঈদ কোরবাণীতে কেউ আমাদের বাচ্চাদের একটি জামা-প্যান্ট দেয়নি। আমি নিজে নদীতে মাছ ধরে ও মানষের বাড়ীতে কাজ-কর্ম করে দুই-এক টাকা কামাই করে পুরাতন মার্কেটের দোকান থেকে অল্পদামে কিনে নিয়ে দিন কাটাই।

নয়া প্যাদার স্ত্রী শাহানাজ বেগম বলেন, আমার স্বামী তিন বছর আগে নিখোঁজ হয়েছে। আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাই, কত ইলিশ আসে আমাদের ভাগ্যে জুটেনা। ছেলে মেয়ে নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটাই। কলাপাড়া উপজেলার ইউএনও মুনিবুর রহমান স্যার আমাদের সেলাই মেশিন দিয়েছেন। তা দিয়ে কিছু জামা কাপড় বানাইয়া এলাকায় বিক্রি করে কিছু টাকা কামাই করে ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনো রকম খেয়ে পড়ে আছি। কেউ আমার স্বামীর সন্ধান দিতে পারলে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। স্বামী নিখোঁজ হওয়া পরে থেকে কচি-কাঁচাদের নিয়ে ঝড়-বন্যার সাথে লড়াই করে এ ঝুপড়ি ঘরে দিন কাটাই। বর্ষা মৌসুমে খুবই কস্ট হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন নিখোঁজ হওয়া জেলেদের অসহায় পরিবারগুলোর জন্য মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে দেয়া একটা ঘর পেয়ে মাথা গোজার ঠাই আশা করছি।

আরও পড়ুনঃ  ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকেে ধর্ষণের অভিযোগ, শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

অপরদিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন তপন বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে নিখোঁজ হওয়া জেলে পরিবারগুলো পাশ আমি আছি, সরকার থেকে যে বরাদ্দ আসে তা থেকে তাদের কিছু দিচ্ছি।