ঢাকাFriday , ২৯ এপ্রিল ২০২২

‘মেয়াদবিহীন’ ডাটা প্যাকেজের নামে দাম বাড়ানোর অভিযোগ

নিউজ পোর্টাল ২৪
এপ্রিল ২৯, ২০২২ ১২:১৮ পূর্বাহ্ন
Link Copied!

‘মেয়াদবিহীন’ ডাটা প্যাকেজের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুতেই এ নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। এর মূল্য ও ডাটার পরিমাণ নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। অনেকের দাবি ‘মেয়াদবিহীন’ ডাটা প্যাকেজের নামে বাড়ানো হয়েছে দাম। আবার অপারেটর ভেদে দামেও রয়েছে ভিন্নতা। এর মধ্যে এসএমপি (সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার) অপারেটর হিসেবে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ইন্টারনেট হবে গ্রামীণফোনের।

এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, মোবাইল অপারেটররা যে পদ্ধতিতে প্যাকেজগুলো তৈরি করছিল সেগুলো ভয়ংকর। এখন গ্রাহকদের কাছে অপশন রয়েছে। তারা ইচ্ছা করলে কম দামে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকের প্যাকেজও নিতে পারেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রমনায় বিটিআরসি কার্যালয়ে ‘আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজ’ এবং ‘নিরবচ্ছিন্ন মাসিক ইন্টারনেট প্যাকেজে’র উদ্বোধন করা হয়।

প্রাথমিকভাবে আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজের মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা ১ হাজার ৯৯ টাকায় ১৫ জিবি ও ৪৪৯ টাকায় ৫ জিবি প্যাকেজ কিনতে পারবেন।

এছাড়া রবিতে ৩১৯ টাকায় ১০ জিবি, বাংলালিংকে ৩০৬ টাকায় ৫ জিবি এবং টেলিটকে ৩০৯ টাকায় ২৬ জিবি ও ১২৭ টাকায় ৬ জিবি পাওয়া যাবে। এসব আনলিমিটেডের ডাটা প্যাকেজের মেয়াদ হবে এক বছর।

মেয়াদহীন এই প্যাকেজে গ্রামীণফোনের প্রতি জিবি ডাটার দাম পড়বে প্রায় ৯০ টাকা; বাংলালিংকে প্রতি জিবির দাম পড়ছে ৬১ টাকা এবং রবি’র পড়বে ৩১ টাকা ৯০ পয়সা। এসএমপি অপারেটর হিসেবে এই প্যাকেজে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ইন্টারনেট হবে গ্রামীণফোনের।

আর রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকের ১২৭ টাকায় ৬ জিবি ইন্টারনেট প্যাকেজে প্রতি জিবির দাম পড়বে ২১ টাকা এবং ৩০৯ টাকার ২৬ জিবির প্যাকেজে প্রতি জিবির দাম পড়বে ৯ টাকা।

এসব প্যাকেজের বিষয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন মনে করে সুকৌশলে ‘আনলিমিটেড’ প্যাকেজের নামে ডাটার দাম বাড়ানো হয়েছে।

প্যাকেজ ঘোষণার পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজ ঘোষণার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা জনগণের সঙ্গে ঈদের আগে উপহাস করলো। ডাটা ফেরত দেওয়ার আমাদের দাবির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে স্বয়ং মন্ত্রী এবং নিয়ন্ত্রণ সংস্থা অপারেটরদের তোপের মুখে পড়ে। আমাদের ধারণা অপারেটরদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতেই আনলিমিটেডের নাম দিয়ে এবং জনগণকে সুবিধা দেওয়ার কথা বলে ডাটার মূল্য দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। যা এক ধরনের জনগণের সঙ্গে প্রহসন ছাড়া কিছুই না।

এবিষয়ে মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, আমরা তো ব্যবসা কন্ট্রোল করি না। তারা (মোবাইল অপারেটররা) যে পদ্ধতিতে প্যাকেজগুলো তৈরি করছিলো সেগুলো ভয়ংকর। সেই ভয়ঙ্কর জায়গা থেকেই আমরা সরিয়ে নিয়ে আসছি। সব অপারেটরকে বলা যাবে না যে তাদের মূল্য বেশি হয়ে গেছে। জিপির রেট বেশি। কারো যদি জিপিকে পছন্দ না হয় তাহলে রবি নেন, রবিকে পছন্দ হয় না, বাংলালিংক নেন। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটক তো আছেই। সুতরাং ইউজার তার পছন্দ বাছাই করতে পারবে। এই বাছাই করার অপশনটাও তো এতদিন ছিল না। তবে গ্রামীণফোনকে যদি ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হয় তাহলে তাদের যে প্রাইসিং আছে সেই প্রাইসিং কমাতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) সাজ্জাদ হাসিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসএমপি অপারেটর হিসেবে আমাদের প্যাকেজের দাম বেশি। তাই অন্যান্যদের মূল্যের সঙ্গে আমাদের মূল্য কখনও মিলবে না। আমাদের নেটওয়ার্ক অন্যদের চেয়ে বেশি। টাওয়ারের সংখ্যা ১৮ হাজারের ওপরে। বাকিদের আরও কম। তাই আমাদের সার্ভিস কোয়ালিটি অবশ্যই অন্যদের চেয়ে ভালো।

রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, পৃথিবীর কোথাও মোবাইলে আনলিমিটেড বলে কিছু নাই। এটা ফিক্সড টেলিফোনের জিনিস। আমি যে ব্যান্ডউইথটা সাপ্লাই দেই এটা খুবই বেশি দাম পরে যায় যখন ওয়ারলেসে দেই। আমরা যে ১০ দিন, দুইদিন, এক মাসের প্যাকেজ দেই, তা প্রাইস মেকানিজমের মাধ্যমে দেই, যাতে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। এখন আনলিমিটেড ডাটার জন্য ক্যাপাসিটি বিল্ড আপ করতে হবে। তার মানে আমাদেরও দাম বেড়ে যাবে। দাম বেড়ে গেলে এটা তো গ্রাহকদের বহন করতে হয়। এজন্য দামটা বেড়ে গেছে।