হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নবজাতক বিক্রি – News Portal 24
ঢাকাThursday , ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নবজাতক বিক্রি

নিউজ পোর্টাল ২৪
ফেব্রুয়ারী ৩, ২০২২ ৯:৫৮ অপরাহ্ন
Link Copied!

হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নবজাতক বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। সন্তান বিক্রি করে পাগল প্রায় মা। এ ঘটনা ঘটেছে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার পালস্ এইড হাসপাতালে।

ঘটনাটি প্রকাশ পায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মতলব উত্তর এলাকার ছেংগার চর এলাকায়। অসহায় ওই নারীর নাম তামান্না বেগম।

তিনি জানান, পাঁচ বছর আগে উপজেলার হানিরপাড় গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে আলমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে না নেওয়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন তামান্না বেগম। তিনি এখন দুই সন্তানের মা। তার স্বামী আলম ঠিকমতো স্ত্রী-সন্তানের ভরনপোষণ করে না। তৃতীয় সন্তানের ডেলিভারির সময় হয়ে এলে স্বামী টাকা জোগাড় করতে না পেরে চলে যান এবং কয়েকদিন ফোন বন্ধ করে রাখেন। তিনি ভাড়া করা বাসায় আসেন না। এর মধ্যে তামান্না বেগমের প্রসব ব্যথা উঠলে তার মা ও স্বজনরা মিলে স্থানীয় মতলব উত্তর পালস এইড হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভর্তি করেন। ঋণ করে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সন্তান প্রসব করলেও সন্তানের মুখ দেখা হয়নি তামান্না বেগমের। হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নিজ সন্তানকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। ছেলেকে বিক্রি করলেও মততাময়ী মায়ের মন সন্তানের জন্য আকুল হয়ে ওঠে।

এদিকে স্বামী আলম বাড়িতে এসে তার সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে তামান্নাকে ব্যাপকভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন ও উত্তেজিত হয়ে মারতে আসেন।

সন্তানহারা মা তামান্না আরও জানান, ‘হাসপাতালে অপারেশনের পরপরই টাকা চাওয়া হয়। আমি গরিব মানুষ টাকা পাব কোথায়? আরেকজন আমাকে বিনামূল্যে রক্ত দিলেও হাসপাতালে রক্তের বিল দুই হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে অপারেশন চার্জ ওষধসহ আনুষঙ্গিক খরচ মিলে বিল আসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। আমি কারো প্ররোচনায় সন্তান বিক্রি করিনি। যখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিল ও নিজের চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারছি না, তখনই বাধ্য হয়ে সন্তান বিক্রির চিন্তা করি। তবে সন্তান প্রসব হওয়ার পর কাউসার নামে এক ব্যক্তি সন্তান বিক্রি করা হবে কিনা তা আমার কাছে জানতে চেয়েছিল।’

আরও পড়ুনঃ  বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ ১১ জেলের সন্ধান মিলেছে ভারতে

পরক্ষণে হাসপাতালের বিলের চাপে একজনের সঙ্গে কথা বলে ৫০ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করি। কিন্তু এখন আমার স্বামী তার সন্তান দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। সে তা নাহলে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলে এবং আমাকে তালাক দেবে হুমকি দিয়ে গেছে। তখন টাকার জন্য সন্তান বিক্রি করলেও এখন আমার সন্তানের জন্য কষ্ট লাগছে। আমি আমার সন্তানকে পেতে সকলের সহায়তা চাই।

এ বিষয়ে হাসপাতালের মালিক পক্ষের প্রতিনিধি লিমন সরকার জানান, বাচ্চা বিক্রির বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। দুইদিন আগে যখন তিনি অপারেশনের সেলাই কাটতে আসেন, তখনও আমরা তার বাচ্চা কেমন আছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন ভালো আছে।

এ ব্যাপারে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী শরিফুল হাসান জানান, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।