নিজস্ব প্রতিবেদক:: “ভালবাসার সাত রঙের” লেখিকা, গল্পকার ও সংবাদকর্মী রিমা বেগম পপি সড়ক দুর্ঘটনায় (মোটর বাইক থেকে ছিটকে পড়ে) ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গতকাল মঙ্গলবার (০৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৯ টায় ওসমানী নগর থেকে সিলেটে আসার পথে তাজপুর এলাকায় তিনি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন। মাথায় গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হলে তাঁকে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। পরবর্তীতে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও মাউন্ট এডোরা হাসপাতাল ঘুরে কোন চিকিৎসা না পেয়ে স্বজনরা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানেও তাদেরকে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। প্রায় দু’ঘন্টা পর মুমূর্ষু রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। মাথায় কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়। উন্নত চিকিৎসা ও গুরুতর আহত ব্যক্তির জীবন বাঁচাতে রোগীর স্বজনরা পরবর্তীতে নিয়ে যান ওয়েসিস হাসপাতালে, এরপর নিয়ে যান আল হারামাইন হাসপাতালে। সংকটাপন্ন এ রোগীকে কোনো হাসপাতালই গ্রহণ করেননি।
রিমা বেগম পপির ছোট বোন শিমু জানান, আমরা রাতের আঁধারে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেছি বোনটিকে নিয়ে। কিন্তু, বাঁচাতে পারলাম না। ভাই, আমার বোনটির জন্য দোয়া করবেন। পরিচিত সবাইকে দোয়া করতে বলবেন। আমার বোনকে সবাই মাফ করবেন।
রিপার অকাল বিয়োগে স্থানীয় এক যুবক বলেন, রিমা বেগম পপি একজন নিরলস ও নির্ভীক সমাজকর্মীও ছিলেন। একসময় শিক্ষকতাও করেছেন কিছুদিন। ভালোমানের একজন কবি ও লেখক। এত অল্প বয়সে সবার প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছিলেন।
করোনাকালে গত বছর বিভিন্ন অসহায় ও অভাবী মানুষকে কিভাবে সহযোগিতা করেছেন তা দেখেছি। তিনি বড়দের খুব শ্রদ্ধা করতেন। “ভাইয়া” বলে তাঁর সে মায়াবী কন্ঠে ডাক আর আমরা শুনব না। এই তো সপ্তাহ দু’য়েক আগে তালতলায় আমি যাচ্ছিলাম। রিমা পাশে একটি দোকানে সম্ভবত ফটোকপি করছিল। আমি খেয়াল করিনি। হঠাৎ শুনি পেছন থেকে একজন ভাইয়া বলে ডাকছে। তাকাতেই দেখি রিমা বেগম পপি।
রিমা এক সময় দৈনিক প্রভাতবেলায় কাজ করতো। পাশাপাশি অফিস থাকার কারণে প্রায়ই দেখা হতো। পরবর্তীতে আমি, প্রিয় সাংবাদিক এন এইচ শিপু সহ কয়েকজন মিলে সাহিত্য রত্ন পরিষদ নামে একটি সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্ঠা করলে পপিও সেখানে যুক্ত হয়।
রিমা বেগম পপি একজন ভদ্র, অমায়িক, বন্ধুবাৎসল্য ও মিশুক চরিত্রের একজন নারী। সত্যিই অনেক ভালো মেয়ে, ভালো মানুষ।
আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের সুউচ্চ মর্যাদা দান করুন। তাঁর শোকাহত পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য্যধারণের শক্তি দান করুন। আমীন।