শিশুরা সংবেদনশীল এবং অনেক বেশি স্পর্শকাতর। তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বড়দের চেয়ে দুর্বল হয়। আবহাওয়ার তারতম্য হলেই শিশুদের জ্বর, সর্দি-কাশিতে ধরে বসে। এছাড়া খাওয়া দাওয়ায় একটু অনিয়ম হলেই পেটের সমস্যায় ভোগে শিশুরা। এর মধ্যে শিশুদের হজমের সমস্যা বেশি হয়।
শিশুদের দুর্বল হজম শক্তির কারণে তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় না। কারণ হজম সমস্যায় শিশুর খাবারে অনিহা, বমি করা, খাবার দেখলেই কান্নাকাটি করা, পেট ফুলে থাকা, এমনকি পেট খারাপের মতো সমস্যা হয়।
শিশুর হজমের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে একটু বেশি যত্নবান হতে হবে। এরজন্য কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
১. বাচ্চাদের জন্য স্তন্যপান জরুরি। এতে হজম শক্তি বাড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নবজাতকদের কমপক্ষে টানা প্রথম ৬ মাস অবশ্যই মাতৃদুগ্ধ পান করানো উচিত। মাতৃদুগ্ধ পানে শিশুর শরীরে পুষ্টিগুণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যা হজমেও সহায়তা করে।
২. শিশুর প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার দিন। অনেক বাবা-মা শিশুকে বেশি খাওয়ানোর জন্য় রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নামেন। তাদের ধারণা বেশি খেলে শিশু দ্রুত বড় হবে। এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। শিশুকে বয়স অনুযায়ী পর্যাপ্ত খাবার দিন। অতিরিক্ত পরিমাণে নয়। শিশু যেন ক্ষুধার্ত না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখুন। খালি পেটে কিংবা অতিরিক্ত খেলে শিশুদের হজমে সমস্যা হতেই পারে।
৩. শিশুদের সব ধরণের খাবারে অভ্যস্ত করুন। বিশেষ করে ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি খাওয়ান। এটি বাচ্চাদের হজম ক্ষমতা শক্তিশালী করে। বিনস, বেরি জাতীয় ফল, আপেল এবং উচ্চ ফাইবার সিরিয়াল বাচ্চাদের হজম ক্ষমতা ঠিক রাখে।
৪. বাচ্চাকে পর্যাপ্ত পানি পান করান। ফলের জুস করে খাওয়াতে পারেন। এতে বাচ্চাদের শরীর হাইড্রেট থাকে। বাচ্চাদের অন্ত্র ভাল রাখে।
৫. শিশুদের স্তন্যপান কিংবা বোতলের দুধ খাওয়ার পর ঢেকুর তুলে নিন। এ সময় শিশুরা প্রচুর পরিমাণে বাতাসও গ্রহণ করে। এর থেকে শিশুদের পেটে ফোলাভাব, ব্যথা, গ্যাসের সমস্যা, বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দেয়। শিশুকে খাওয়ানো পর কোলে তুলে সোজা অবস্থায় কিছুক্ষণ রাখুন। শিশুর ঢেকুল তোলা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। বাচ্চাদের কাঁধের উপর শুইয়ে, পিঠে আলতো করে মালিশ বা চাপড় দিতে থাকুন। সহজেই ঢেকুর তুলতে পারবে।
৬. শিশুদের হাড় এবং পেশী শক্তিশালী করতে নিয়মিত ম্যাসাজ করুন। শিশুর তুলতুলে শরীরের ম্যাসাজ করুন। এটি বাচ্চাদের হজম সমস্যাও দূর করবে। বেবি ম্যাসাজ অয়েল নিন। এটি বাচ্চাদেুর পেট এবং নাভির চারপাশে আলতো করে বৃত্তাকার পদ্ধতিতে মালিশ করুন। শিশুর পেটে আটকে থাকা গ্যাস বের করে দিবে। শিশুর পা ও তার পেটের ওপর আলতো করে চেপেও ম্যাসাজ করতে পারেন। শিশুরা আরাম পাবে। ভালো ঘুম হবে। সেই সঙ্গে হজম শক্তিও বাড়বে।
৭. শিশুদের বাইরের খাবার একেবারেই দিবেন না। বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার শিশুর পেটের সমস্যার প্রধান কারণ। শিশু মর্জি করলেও বাইরের খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
সূত্র: বেবী সেন্টার