ঢাকাSunday , ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

পর্নো তারকা রন জেরেমি যেভাবে যুবতীদের ধর্ষণ করেন

নিউজ পোর্টাল ২৪
সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১ ৫:২৬ পূর্বাহ্ন
Link Copied!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: পর্নো জগতের শক্তিধর ও জনপ্রিয় তারকা রন জেরেমি (৬৮)। তিনি পর্নো ছবিতে অভিনয় করলেও কমপক্ষে ২১ জন নারী তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন।

শনিবার আদালতে দাঁড়িয়ে তাদের কয়েকজন এর বর্ণনা দিয়েছেন। বলেছেন, রন জেরেমি একজন পর্নো অভিনেতা এবং জনপ্রিয় অভিনেতা- এ জন্য তারা মজা করে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতেন। আবার কেউ বলেছেন, তার অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন রন জেরেমি।

তিনি এসব নারীকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতেন এবং ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতন করতেন। একই কৌশল তিনি বছরের পর বছর চালিয়ে এসেছেন।

নির্যাতিত নারীরা গ্রান্ড জুরির সামনে শনিবার এসব কথা বলেছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।

ওই নারীদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে তাদেরকে শনাক্ত করা হয়েছে জেন ডো ৮, জেন ডো ৭- এভাবে সংখ্যা দিয়ে। এর মধ্যে জেন ডো ৮ হিসেবে চিহ্নিত এক নারী বলেছেন, রন জেরেমি একজন অভিনেতা। যদি তার একটি ছবি এবং একটি অটোগ্রাফ সংগ্রহ করি তার কাছ থেকে তাহলে কত মজাই না হবে? এক বন্ধুকে এ কথা বলেছিলেন তিনি।

তখন তিনি ওয়েস্ট হলিউডের একটি বার অ্যান্ড গ্রিলে সাক্ষাৎ পান রন জেরেমির। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে ওই নারীকে যৌন নির্যাতন করেন রন জেরেমি। সেখানে একটি বাথরুমে তার ওপর এই নির্যাতন হয়। একই রকমভাবে তিনি আরো নারীর ওপার ছোট্ট ওই বাথরুমে যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন।

জেন ডো ৭ হিসেবে চিহ্নিত আরেকজন নারী বলেছেন, আমি অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম রন জেরেমিকে দেখে। বলেছিলাম এটাই রন জেরেমি! আসলেই আমি অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। আমি তাকে পছন্দ করতাম। তবে সেলিব্রিটি বলতাম না। হলিউডের একটি হোটেল কক্ষে বন্ধুদের নিয়ে অবস্থান করছিলেন জেন ডো ৭। আকস্মিকভাবে সেই রুমে প্রবেশ করেন রন জেরেমি। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জেন ডো ৭’কে ধর্ষণ করেন।

রন জেরেমির প্রকৃত নাম রোনাল্ড জেরেমি হায়াত। ২৫ শে আগস্ট তাকে অভিযুক্ত করার জন্য লস অ্যানজেলেস কাউন্টি গ্রান্ড জুরি তার কাছে গেলে তার বিরুদ্ধে আনা ১২টি ধর্ষণসহ ৩৪ টি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন রন জেরেমি। ২০২০ সালের জুনে তাকে গ্রেপ্তার করার পর জেলে রয়েছেন। তার আইনজীবী স্টুয়ার্ট গোল্ডফার্ব বলেছেন, তিনি এসব অভিযোগের সবটাতে নির্দোষ। এটা প্রমাণও করতে পারবেন।

রন জেরেমির ডাকনাম ‘দ্য হেজহগ’। কয়েক দশক ধরে পর্নো শিল্পে তিনি সবচেয়ে সুপরিচিত এবং সবচেয়ে উচ্চ মানের অভিনেতা। পপ সংস্কৃতিতেও তার স্বীকৃতি রয়েছে। অংশ নিয়েছেন রিয়েলিটি শোতে। উপস্থিত হয়েছেন পাবলিক অনুষ্ঠান ও মিউজিক ভিডিওতে। দীর্ঘদিন ধরে মানুষ তার সঙ্গে অটোগ্রাফ এবং সেলফি তোলার জন্য উন্মত্তের মতো আচরণ করে।

এই সুযোগ নিয়ে তিনি ১৫ থেকে ৫১ বছর বয়সী নারীদের যৌন নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে প্রথম দিকে তাকে অনেকে চিনতেও পারেননি। কিন্তু পরক্ষণে তার চারপাশের যে আবহ তাতে তারা চিনে নিয়েছেন।

২০০৪ সালে ১৫ বছর বয়সী একটি বালিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আছে রন জেরেমির বিরুদ্ধে। ওই বালিকাটি এখন ৩৩ বছরের যুবতী। তিনি বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারিটায় এক অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল এই অভিনেতার। এই যুবতীকে এখন জেন ডো ৫ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেছেন, তিনি কে তা আমি ওই সময় জানতাম না। তবে আমাকে সবাই বলেছিলেন, তিনি একজন বিখ্যাত ব্যক্তি। এ জন্য একজন সেলিব্রেটির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আনন্দে আমি উদ্বেলিত ছিলাম।

কিন্তু এই সাক্ষাতের পর জেন ডো ৫’কে স্টেজের পিছনে ডেকে নেন রন জেরেমি। সেখানে তার কাছে জানতে চান, তুমি কি মজার কিছু নিতে চাও। এ কথা বলেই তিনি তাকে শূন্যে টেনে তোলেন। নিজের হাত প্রবেশ করিয়ে দেন তার স্কার্টের নিচে এবং তাকে যৌন নির্যাতন করেন।

অনেক নারী একই রকম অভিযোগ করেছেন। তারা বলেছেন, এই রকম পদ্ধতিতে তিনি নির্যাতন করেছেন তাদের। ওয়েস্ট হলিউডের সানসেট স্ট্রিপের রেইনবো বার অ্যান্ড গ্রিলে নিয়মিত যাতায়াত করতেন রন জেরেমি।

সেখানে কর্মচারীদের বাথরুম তাকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। সেখানে প্রস্তুত করা হতো খুব ভাল মানের পিৎজা। সেই কিচেন বা রান্নাঘর দেখানোর প্রস্তাব দিয়ে নারীদের প্রলুব্ধ করে সেখানে নিয়ে যেতেন অথবা পাবলিক রেস্টরুম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি যুবতীদের বলতেন তারা ব্যবহার করতে পারবেন এমন একটি বাথরুমের খবর আছে তার কাছে।

এসব যুবতী যখন ছোট্ট ওই স্থানগুলোতে প্রবেশ করতেন, তখন তাদের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পিছন থেকে প্রবেশ করতেন। ভিতরে প্রবেশ করেই দরজা লক করে দিতেন। রন জেরেমির শারীরিক আকার বিশাল। সেই শরীর দিয়ে তিনি এসব যুবতীকে সেখান থেকে বের হতে দিতেন না। তারপর তাদেরকে ধর্ষণ করতেন অথবা যৌন নির্যাতন করতেন।

জেন ডো ৮ বলেছেন, তিনি যৌন নির্যাতিত হওয়ার আগে লিউয়ের হলিউস হোটেলের যে কক্ষে ছিলেন, তার রুম নম্বর তিনি রন জেরেমিকে বলেননি। কখনো কখনো নিজের পিরিয়ড বা যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা কেমন সে সম্পর্কে নোট লেখার জন্য বলতেন যুবতীদের। কিছু নির্যাতনের শিকার নারীকে তিনি নির্যাতনের পরে নগদ অর্থ দিয়েছেন।

একজন নারী বলেছেন, ২০১৯ সালে রেইনবো বার অ্যান্ড গ্রিলের বাথরুমে তাকে ধর্ষণ করেন রন জেরেমি। এরপর তার মুখের ওপর নগদ অর্থ ছুড়ে মেরে চলে যান। ওই অর্থের পরিমাণ ছিল ১০০ ডলার। ওইদিন রাতের আগেই জেরেমি থেকে ওই নারীকে সতর্ক থাকার জন্য বলেছিলেন তার বয়ফ্রেন্ড এবং ভাই। কিন্তু তাদের কথা না শুনে, তিনি কোনো না কোনোভাবে তার সঙ্গে ছবি তোলেন। কারণ, তিনি দেখতে পেয়েছিলেন যে, অন্যরাও এ কাজ করছে।