ডেস্ক রিপোর্ট:: রাজশাহীতে মজিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশের তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে সাভারে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষিকার ভয়ংকর ফাঁদের রহস্য। পুলিশ জানিয়েছে, শিক্ষকতার পরিচয়ের আড়ালে মানুষকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করতেন দুই নারী। এমন কাণ্ডে যুক্ত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তারা হলেন- আইরিন ইয়াসমিন লিজা (৩৪) ও শামীমা আক্তার (২৪)। আইরিনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বালিচ গ্রামে। আর শামীমা ঢাকার সাভারের ডেন্ডাবর নতুনপাড়ার বাসিন্দা। দুজনেই সাভারের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ঢাকা থেকে রোববার রাতে তদের গ্রেফতার করা। তাদের বিরুদ্ধে মজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে আত্মহত্যার প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, মজিবুর রহমান রাজশাহীতে প্লট কেনাবেচা এবং প্রাইভেটকার ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করতেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর উপশহরের দুই নম্বর সেক্টরের একটি ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ছেলে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন। সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দুই নারী শিক্ষকের সম্পৃক্ততার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এরপরই তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে মৃত মজিবুর রহমানের মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, শিক্ষকতা পেশার আড়ালে এই দুই নারী মানুষকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করতেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আইরিন জানিয়েছেন, ‘মজিবুর রহমানের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। ৬ ফেব্রুয়ারি তারা দুজন স্বেচ্ছায় মজিবুরের বাড়ি এসেছিলেন। রাতে তারা মজিবুরের পাশের ঘরে শুয়েছিলেন। তখন মজিবুর রহমান মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আইরিনকে তার ঘরে ডাকেন। আইরিন না গেলে মেসেঞ্জারেই তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর মজিবুর জানান, রাত ৩টার মধ্যে আইরিন না গেলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। তখন আইরিন মেসেঞ্জার এবং এসএমএসের মাধ্যমে মজিবুর রহমানকে মরতেই বলেন। অভিমানে মজিবুর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে সকালে আইরিন ও শামীমা তার ঝুলন্ত লাশ দেখে বাড়ি থেকে মজিবুরের মোবাইল, বাড়ির চাবি এবং নগদ চার লাখ টাকা ও কিছু কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে যান।’
আরএমপি কমিশনার আরো বলেন,এই দুই নারী ব্ল্যাকমেইল চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে। দুজনকে মজিবুরের আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।