আবহমানকাল থেকে ব্যবসা মানবসমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ব্যবসায় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থে মানবিক হতে ইসলাম শিক্ষা দেয়। সততা, আস্থা আর বিশ্বাস; ব্যবসায় ইসলামী নীতির প্রাণ। হাদিসে এসেছে, সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী কেয়ামতের দিন নবী, সত্যবাদী ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে (তিরমিজি হা. ১২০৯)।
এ হাদিস দিয়ে বোঝা যায়, ব্যবসা শুধু উপার্জনের মাধ্যমই নয়; ইহলৌকিক ও পারলৌকিক বিচারে ব্যবসা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রায় সব নবী-রাসূলই ব্যবসা করেছেন। তারা মানবসেবা হিসাবে ব্যবসা করেছেন। এ জন্য আমাদেরও ব্যবসায় মানবিক হতে হবে।
ব্যবসায় মানবসেবার বিশেষ একটি দিক হচ্ছে বিক্রীত পণ্য ফেরত নেওয়া। আমরা অনেক দোকানের সামনে বা তাদের কাগজপত্রে লেখা দেখতে পাই, বিক্রীত পণ্য ফেরত নেওয়া হয় না, এর পক্ষে যত যুক্তিই থাকুক; আপনি যদি বিক্রীত পণ্য ফেরত নেন, তাহলে বিরাট বড় সওয়াবের ভাগী হওয়ার পাশাপাশি একটি মানবিক কাজ করলেন।
হাদিসে এসেছে, বিক্রীত পণ্য ফেরত নেওয়া; কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন (সুনানে আবু দাউদ। হা. ৩৪৬০)।
একজন মানুষ তার যে কোনো প্রয়োজনেই কেনা পণ্যটি ফেরত দিতে আসতে পারে। আপনার বিবেচনায় যদি পণ্যটি ফেরত নেওয়া সম্ভব হয়, তাহলে তা ফেরত নেবেন। বিষয়টি যদিও ঐচ্ছিক; তবে এর প্রতিদান বিরাট বড়। কেয়ামতের দিন যখন আপনার জন্য বাঁচার কোনো উপায় থাকবে না; বিক্রীত পণ্যটি ফেরত নেওয়ার মাধ্যমে আপনি সেই কঠিন বিপদের দিনে এর উসিলায় পার পেয়ে যেতে পারেন।
এক হাদিসে এসেছে, যে দুনিয়াতে কারও বিপদ দূর করবে, আখেরাতে আল্লাহ তার বিপদ দূর করবেন (মুজামে আওসাত ২/৮৬)। একজন মানুষ সাধারণত বিপদে পড়েই কেনা পণ্য ফেরত দিতে আসে।
এ জন্য আমরা যদি বিক্রীত পণ্য ফেরত নিই, তাহলে হাদিসে ঘোষিত বিরাট ফজিলতের অংশীদার হতে পারব। আল্লাহতায়ালা আমাদের হাদিসের শিক্ষার ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন।
লেখক : ওলিউর রহমান
মুহাদ্দিস ও প্রাবন্ধিক।