একজন ধ’র্ষি’তার ফরেনসিক টেষ্ট যেভাবে করা হয়, জানলে শিউরে উঠবেন – News Portal 24
ঢাকাSunday , ৪ জুলাই ২০২১

একজন ধ’র্ষি’তার ফরেনসিক টেষ্ট যেভাবে করা হয়, জানলে শিউরে উঠবেন

নিউজ পোর্টাল ২৪
জুলাই ৪, ২০২১ ৫:১১ অপরাহ্ন
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক:: একজন ধ’র্ষিতার ফরেনসিক টেষ্ট কিভাবে করা হয়? এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর কতজন সাধারন মানুষ জানেন! আমিও তা জানতাম না। ভাসা-ভাসা একটা ধারনা ছিলো। আজকে একটা অনলাইন পত্রিকার সূত্র থেকে ব্যাপারটা সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা তৈরি হলো।

বাংলাদেশে এই ব্যাপারটি যে এতটা ভয়াবহ, সেটা জানা ছিলো না।এতদিন শুনে এসেছি, ডাক্তারি পরীক্ষার নামে ভিকটিম ২য় বার রেপড হয়। এতদিন ভাবতাম, পরীক্ষার প্রয়োজনেই তাকে বুঝি এই দ্বিতীয়বার রে’প করা হয় এবং এটা রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয় এবং ব্যাপারটা পুরোটাই মেন্টাল ট্রমা।

কিন্তু আদতে টেষ্টের পুরো প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিটি যে প্রায় আক্ষরিক অর্থেই একজন নারীর জন্য মানসিক ও শারিরীক যৌ’ন নির্যাতন, এটা আজ জানলাম।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা এ ব্যাপারে কিছু গবেষনা করেছেন। তিনি সেই গবেষনার ফলাফল, ফরেনসিক টেষ্ট পদ্ধতি ও এ বিষয়ে নিজের মতামত বিস্তারিত জানিয়েছেন।

শুরুতেই তিনি বলেছেন, এই মেডিকেল পরীক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো একটি ভীষণ রাজনৈতিক লড়াইয়েরই অংশ।

আর আমার ধারনা, এই লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি সমাজ ও রাজনীতি সচেতন মানুষের অবতীর্ণ হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু তার আগে পদ্ধতিটির ব্যাপারে সম্যক ধারনার পেতে তার লেখাটি পড়ে নিতে হবে।

প্রতিবেদনটি বড়, কিন্তু ধৈর্য্য ধরে পুরোটা পড়ে শেষ করলে গা শিউড়ে ওঠতে হয়। আমি প্রতিবেদনটির মাঝখানের অংশ হুবহু কোট করছি।

বিরাজমান এই নারীবিদ্বেষী মেডিকেল পরীক্ষণের ব্যবস্থাপনার সাথে সাথে ধ’র্ষণের মেডিকেল পরীক্ষার ফরমেট নিজেই একটি পুরুষালি মতাদর্শিক উৎপাদন। ব্যবহৃত “টু ফিঙ্গার টেস্ট” ধ’র্ষণের সার্ভাইভার নারীর যো’নিপথের ঘনত্ব পরিমাপ করে, তার হাইমেনের উপস্থিতি-অনুপস্থিতি নির্দিষ্ট করে।

সাক্ষাৎকার গ্রহণকৃত চিকিৎসক জানান, পরীক্ষার সময় নারীর হাইমেনকে একটি গোলাকার ঘড়ির ফ্রেম হিসেবে দেখা হয়। ঘড়ির কাঁটার ৩ বা ১০-এর অবস্থানে যদি ধ’র্ষিতার হাইমেন ছেঁড়া থাকে, তবে চিকিৎসক ধরে নেন এখানে জোরাজুরি বা অসম্মতির সে’ক্স হয় নি। আর যদি হাইমেন নিচের দিকে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার ৫ অথবা ৮-এর দিকে ছিঁড়ে, তবে চিকিৎসক এটা ঘোষণা করেন যে এই হাইমেন ছেঁড়ায় জোরারোপ করা হয়েছে।

পাশাপাশি “টু ফিঙ্গার টেস্টে” ব্যবহৃত চিকিৎসকের হাতের আঙুল তাঁর শরীরের আকার, গড়ন, ইত্যাদির ভেদে যেমন বিভিন্ন হয়, তেমনি একজন চিকিৎসক তাঁর আঙুলের বেড়ের সাপেক্ষে নিজস্ব অনুভূতিতে অনুভব করেন যে আঙুল কত সহজে বা কঠিনে যো’নিপথে প্রবেশ করল। ফলে এই ভীষণ সাবজেকটিভ পরীক্ষণ পদ্ধতি কখনোই নারীর শরীরের ভিন্নতর গঠন বাস্তবতাকে নির্ণয় করবার কোনো ক্ষমতা রাখে না। বরং নারী শরীরের এই মাপজোকের সাথে নারীর যৌ’নসম্পর্কে অসম্মতি আছে কি নেই তার যতটা না সম্পর্ক রয়েছে, তার চাইতে ‘সত্যিকারের ধর্ষণের’ ধারণা এই মাপজোকের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণভাবে বৈজ্ঞানিক যৌক্তিকতায় প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে।

মেডিকেল পরীক্ষার সময় আমরা ধরেই নেই, ধ’র্ষণ হতে পারে রাতের আঁধারে, অস্ত্রের মুখে, অচেনা মানুষ কর্তৃক এবং হাইমেন অক্ষত থাকা সমাজের কুমারী নারীর সাথে, যা কিনা নিচের দিকে, নতুন করে হাইমেন ছিঁড়লে এবং যো’নিপথ শক্তপোক্ত হলেই কেবল ঘটতে পারে। ফলে যে নারীর হাইমেন আগে ছিঁড়েছে, সে যে কারণেই হোক, যে নারী বিবাহিত, যার যো’নিপথ সমাজ অনুমোদিত স্বামীসঙ্গের কারণেও ঢিলেঢালা হয়ে পড়েছে, মেডিকেল এভিডেন্স তাঁর প্রসঙ্গে হাইমেন অল্ড রেপচার (সতীচ্ছদ আগে থেকেই ছেড়াঁ), ‘হেবিচুয়েট টু সে’ক্স’ (যৌ’নকর্মে অভ্যস্ত) এই বিশেষণগুলো ব্যবহার করবে।

আর কোর্টে মেডিকেল পরীক্ষার এই অল্ড রেপচার, হেবিচুয়েট টু সে’ক্স বিশেষণগুলো নারীর পূর্বেকার যৌ’ন ইতিহাসের বয়ান উপস্থিত করে, বিচারকক্ষে ধরে নেয়া হয় নারীটি পূর্বেও যৌ’নকাজে লিপ্ত হয়েছে। ফলে তাঁর ‘সতীত্ব’ নেই, পুরুষালি আইনি পরিসর ধ’র্ষ’কের তরফ থেকে নারীর ধ’র্ষণকেন্দ্রিক অসম্মতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবার সুযোগ তৈরি করে দেয় এবং এই সামাজিক ধারণাতেই বিচার প্রক্রিয়া চলতে শুরু করে ‘যে নারী কুমারী না, তার ধর্ষণ হয় কীভাবে?’

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই বিশেষণ কোনো বিশেষ বয়সের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, “টু ফিঙ্গার টেস্ট” কোনো বয়সের ধ’র্ষিতা নারীর সাথে সম্পাদন করা যাবে এ নিয়ে কোন নীতিমালা প্রণীত হয় নি, আর তাই মেডিকেল পরীক্ষার সনদে ৮, ৬ এমনকি ৫ বছরের মেয়েশিশুও (টু ফিঙ্গার টেস্টের পরে) ‘হাইমেন ওল্ড রেপচার’, হেবিচুয়েট টু সে’ক্স’ এই বিশেষণে বিশেষায়িত হতে পারেন।”

লেখাটি পড়ে যা বুঝলাম-

১। মেডিকেল এবং আইনের ধারনা, একজন নারী তখনই ধ’র্ষণের শিকার হতে পারেন, যখন তার সতীচ্ছেদ পর্দা ও যো’নীর ঘনত্ব অটুট থাকে। নারী তখনই ধ’র্ষিতা হতে পারেন, যখন তার পরীক্ষিত স্তন ঝুলে না-পড়ে, অর্থাৎ আপনি শারীরিকভাবে বহু ব্যবহারের সামাজিক অর্থ নিজের স্তনে বহন না-করে থাকেন।

২। আপনি যদি বে’শ্যা না-হয়ে থাকেন কিংবা বিচার প্রক্রিয়ায় যদি কোনোভাবে অভিযুক্ত ধ’র্ষকপক্ষ আপনাকে বহুগামী যৌ’নসম্পর্কে (একাধিক পুরুষের সাথে নিয়মিত বা অনিয়মিত শারিরীক সম্পর্ক) সম্পর্কিত ‘মন্দ নারী’ বা ‘বে’শ্যা’ হিসেবে প্রমাণ করতে না-পারে, কেবলমাত্র তখনই আপনি একজন ধ’র্ষিতা একথা প্রতিষ্ঠা করবার সুযোগ বিচারকক্ষে পেলেও পেতে পারেন।

৩। বিবাহিত নারীর ধ’র্ষণ, পায়ুধ’র্ষণ, শিশুধ’র্ষণ এই বিষয়গুলো সমাজের কাঙ্খিত ধ’র্ষণের চেহারার মধ্যে নেই।

৪। মেডিকেল পরীক্ষার সনদে ৮, ৬ এমনকি ৫ বছরের মেয়েশিশুও (টু ফিঙ্গার টেস্টের পরে) ‘হাইমেন ওল্ড রে’পচার’, হেবিচুয়েট টু সে’ক্স’ এই বিশেষণে বিশেষায়িত হতে পারে। কারন কোন প্রাকৃতিক কারনে যদি ঐ শিশুটিরও সতী পর্দা ছেড়াঁ থাকে, মেডিকেল সার্টিফিকেটে সে শিশুও একজন “নিয়মিত যৌ’নকর্মে অভ্যস্ত” বলে পরিচিতি পাবে।

৫। ধ’র্ষণ মামলার মেডিকেল সনদের সামগ্রিক পদ্ধতিগুলো ধ’র্ষিতা নারীর অতীত যৌ’ন আক্রমণ, হয়রানি এবং নির্যাতনের ইতিহাস নয়, বরং নারীর অতীত যৌ’ন ইতিহাস দেখতে আগ্রহী। নারীটি আগে সে’ক্স করেছে কিনা, অতীত সে’ক্সে’র কোন আলাতম তার শরীর বহন করে কিনা এটার সাথে সে ধ’র্ষিত হয়েছে কি হয়নি – সেটার কি সম্পর্ক, আমার জানা নেই।

৬। ধ’র্ষিতার স্তন ঝুলে পড়েছে কিনা সেটাও নাকি পরীক্ষা করা হয়! একটা কথা বলে রাখি, টু ফিঙ্গার টেস্ট পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে ব্যবহার করা হয় না। কারন, এই পরীক্ষা পদ্ধতি খুবই অবৈজ্ঞানিক, অযৌক্তিক, সনাতন ও সামাজিকভাবে বিতর্কিত। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও বহু আগে এই মেডিকেল পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। সেখানে আইন করা হয়েছে, ধ’র্ষিতার গো’পনাঙ্গ ডাক্তারের সামনে কেবল চিকিৎসার জন্যই উন্মোচিত হতে পারে, নিরীক্ষার জন্য নয়।

ভারতে যেভাবে একজন রে’ইপ ভিকটিমের ফরেনসিক টেষ্ট করা হয়

ভারতের ডাক্তার কে এস নারায়ণ রেড্ডি, ডাক্তার ও পি মূর্তি তাঁদের ‘দা এসেন্সিয়ালস অফ ফরেনসিক মেডিসিন এন্ড টক্সিকোলজি’ বইতে জানিয়েছেন সেই প্রশ্নের উত্তর। সেই বই থেকে ধর্ষণোত্তর ডাক্তারি পরীক্ষার যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে তা শিউরে ওঠার মতো।

আর সেই বই থেকে তুলে দেওয়া হলো ১০টি তথ্য:

১. ডাক্তারি পরীক্ষার সময়ে একটি একটি করে ভিক্টিমকে তার সমস্ত পোশাক খুলে নিতে হয় একজন ডাক্তারের উপস্থিতিতে। একটি কাগজের টুকরোর উপরে দাঁড়িয়ে এই কাজ করতে হয়, যাতে পোশাক খোলার সময়ে মেয়েটির শরীর থেকে নীচে খসে পড়া যে কোনও কিছু বা সমস্ত কিছু ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা যায়। শরীরে লেগে থাকা রক্ত, বী’র্য, কাদা, কিংবা ঘাম ইত্যাদি যা কিছু অপরাধের প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগতে পারে, সংগ্রহ করা হয় মেয়েটির শরীর থেকে।

২. সম্পূর্ণ ন’গ্ন অবস্থায় আল্ট্রভায়োলেট আলোর সাহায্যে মেয়েটির শরীর পরীক্ষা করে দেখা হয় তার শরীরের কোনও অংশে বী’র্যের কোনও চিহ্ন রয়েছে কি না।

৩. শরীরে তৈরি হওয়া কোনও কাটা, ছড়া বা ছাল উঠে যাওয়ার মতো ক্ষতস্থান যেগুলো ধস্তাধস্তির ফলে তৈরি হতে পারে, সেগুলিকে খুঁটিয়ে দেখে পরীক্ষা করা হয়।

৪. শরীরের আঘাতপ্রাপ্ত অংশগুলি, বিশেষত যৌ’ন অঙ্গের ক্লোজ আপ ছবি নেওয়া হয়।

৫. মেয়েটির শরীরের কোনও অংশে কতটা চাপ পড়েছে তার উপর নির্ভর করে কী ধরনের ক্ষত তৈরি হবে সেই অংশে। যদি মেয়েটির পিঠে বা কোমরে ছড়ে যাওয়ার দাগ থাকে, তাহলে বুঝতে হবে, মেয়েটিকে কোনও পাথুরে বা শক্ত জমির উপর ফেলে নির্যাতন চালানো হয়েছে। স্তনবৃন্তে কামড় বা অন্য কোনও আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যেতে পারে।

৬. তবে সাধারণত লাঞ্ছিতার ১/৩ অংশের শরীরেই এই ধরনের কোনও ধস্তাধস্তির চিহ্ন দৃশ্যমান হয় না, কারণ ধ’র্ষণের সময়ে মেয়েরা ভয়ের চোটে সাধারণত আক্রমণকারী খুব একটা বাধা দেয় না।বিশেষত, মেয়েটির মাথায় যদি আঘাত করা হয়, কিংবা গলা চেপে ধরা হয়, তাহলে তার বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এবং সাহস কমে যায় অনেকটাই। সেসব ক্ষেত্রে তার শরীরের অন্যান্য অংশে তেমন গুরুতর আঘাতের চিহ্ন আর থাকে না।

৭. মেয়েটির যৌ’ন কেশ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়, সেখানে কোনও পুরুষের যৌ’ন কেশ কিংবা ধুলোবালি ইত্যাদি লেগে রয়েছে কি না। ধ’র্ষি’তা জীবিত হোক বা মৃত, তার অন্তত ১৫-২০টি যৌ’ন কেশ সংগ্রহ করা হয় ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য।

৮. মেয়েটির মাথার চুলও সংগ্রহ করা হয় পরীক্ষার জন্য।

৯. ধ’র্ষি’তার যৌ’ন কেশ কিংবা যো’নির আশেপাশে বী’র্যের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি না, তা খুঁটিয়ে দেখা হয়। তুলোর সাহায্যে মেয়েটির যো’নিরস সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয় ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য। খুঁটিয়ে দেখা হয় মেয়েটির সতীচ্ছদের অবস্থাও।

১০. যদি অপরাধ ঘটে থাকে ৪৮ ঘণ্টা কিংবা তারও বেশি সময় আগে, তাহলে একটি কাঁচের রড, তুলো কিংবা স্প্যাটুলার সাহায্যে যো’নির ভিতর থেকে সংগ্রহ করা হয় যো’নিরস। দেখা হয়, তাতে বী’র্য কিংবা রক্তের কোনও নমুনা মিলছে কি না।

ভারতে  পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরে অকল্পনীয় হেনস্থার শিকার হতে হয় অধিকাংশ মেয়েকে। আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না ঠিকই, কিন্তু সেই প্রক্রিয়া কি আর একটু মানবিক হতে পারে না? আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতা একটু কমিয়ে মেয়েটিকে সুবিচার দেওয়ার বিষয়টি কি করে তোলা যায় না দ্রুততর?

সুইডেনে যেভাবে একজন রে’ইপ ভিকটিমের ফরেনসিক টেষ্ট করা হয়

একজন রে’ইপড ভিকটিমের মেডিকেল টেষ্ট করা হয় এমন কারো সামনে যাকে সে বিশ্বাস করে বা যে সামনে থাকলে সে আশ্বস্ত হয় (যেমন: বাবা-মা, ভাই-বোন বা বয়ফ্রেন্ড/স্বামী, ছেলেবেলার বন্ধু ইত্যাদি)। এবং সেখানে একজন নারী সাইক্রিয়াটিষ্ট থাকেন এবং তাকে কখনই বিপরীত লিংগের কোন ডাক্তার দ্বারা এক্সামিন করা হয় না। পরীক্ষা শুরুর আগে তার মৌখিক ও লিখিত অনুমতি নেয়া হয়। পুরো প্রক্রিয়াটির ভিডিও ও অডিও টেপ করা হবে, সেটা তাকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়। যদি সে না চায়, তবে ভিডিও বা অডিও রেকর্ড করা হয় না।

সাইকোলজিষ্ট আলাদা একটা ঘরে তার সাথ কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নেন সে যে পরীক্ষার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত কিনা। প্রস্তুত না হলে তাকে প্রস্তুত করার জন্য কাউন্সিলিং দেয়া হয়।

ক্রিমিনালকে ধরা হয়েছে বা ধরার জন্য কি কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, একজন পুলিশ অফিসারের উপস্থিতিতে সেটা তাকে বিস্তারিত জানানো হয়। কারন এর ফলে ভিকটিম খানিকটা নিরাপত্তা অনুভব করে। এরপর তাকে আরেকটি ঘরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে তার শরীরের ভিজিবল আঘাতগুলো পরীক্ষা করা হয়।

সবশেষে একজন নারী ডাক্তার একটি বদ্ধ রূমে ভিকটিমের বিশ্বস্ত মানুষের উপস্থিতিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে ফরেনসিক টেষ্ট করেন।

হাতে গ্লভস পড়ে একটি বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক কাঠি দিয়ে খুব ধীরে ধীরে তার হাইমেন পরীক্ষা করা হয়। সেটি ছেড়াঁ কিনা সেটার দেখার চাইতে সেখানে থাকা স্পার্মের খোজঁই বেশী করা হয়।

স্পার্ম পাওয়া মাত্র সেটা ডিএনএ টেষ্টের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয় পুলিশের ডেটাবেজে থাকা কোন অপরাধীর ডিএনএর সাথে ম্যাচ করে কিনা সেটা পরীক্ষা করার জন্য। এবং হাইমেন টেষ্টের এই পুরো ব্যাপারটি ভিকটিম শুয়ে শুয়ে মনিটরে দেখতে পান। হাইমেনের কোথায় কি ধরনের চিহ্ন তারা খুজঁছেন, সেটা পরীক্ষা করতে করতে ডাক্তার ভিকটমকে বলেন।

ভিকটিম ভাষা ভালো করে না বুঝলে একজন নারী ইন্টারপ্রেটার ব্যবহার করা হয়, সে পাশের রূম থেকে অডিও মডিউলের মাধ্যমে ডাক্তারের কথা ভিকটিমের মাতৃভাষায় অনুবাদ করে দেয়।

ভিকটিমের হাইমেন খুব ক্ষতিগ্রস্থ হলে বা ইন্টারনাল বা এক্সটারনাল ব্লিডিং হলে টেষ্ট বাদ দিয়ে তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়। অথচ বাংলাদেশে, আলামত নস্ট হয়ে যাবার ভয়ে চিকিৎসার আগেই টেষ্ট করা হয়।

ধ’র্ষিতা নারী যখন আক্রান্ত হয়, তখন সে প্রবলভাবে বাধা দেয়। দাঁতে নখে লড়াই করে। ধ’র্ষণকারীও/রাও প্রবল শক্তি প্রয়োগ করে। এর ফলে ভিকটিম আহত হবে এটাই স্বাভাবিক। তার সারা দেহেই ইনজুরি থাকবে। তার নখে ধ’র্ষণকারীর শরীর চামড়া মাংস লেগে থাকবে, গায়ে কামড় বা লালাল দাগ থাকবে, এসব ফরেনসিক টেস্টের একটা বড় হাতিয়ার। সবকিছু বাদ দিয়ে ধ’র্ষিতার যৌ’নাংগে দুই আংগুল কেন প্রবেশ করার পদ্ধতিটি যে কতটা অমানবিক সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল জারি করেছিলো । আমি এ বছরের এপ্রিলের ১৬ তারিখ হাইকোর্টের এই রুলকে যেমন অভিবাদন জানিয়েছিলাম, এখনও জানাই। আজীবনই জানাবো।

শেষ করছি লেখিকার শেষ বাক্যটি দিয়ে, এই আইনটি পাস হলে হয়তো ধ’র্ষণের সার্ভাইভার নারী জোর গলায় এই প্রশ্ন করতে পারবে আমার ছেঁড়া হাইমেন আর ঢিলা যো’নিপথ থাকার সাথে যৌ’নকাজে অসম্মতি প্রকাশের সম্পর্কটা কী ?

-সংকলিত ইন্টারনেট থেকে।