ডেস্ক রিপোর্ট:: স্ত্রীর মর্যাদার পেতে ১২ দিন ধরে বালিয়াডাঙ্গীর চড়ুইগদি গ্রামের মাসুদ রানা নামে একজনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে ২৫ বছর বয়সী এক তরুণী।
তবে ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও তার স্বামীর কোন দেখা পায়নি ওই তরুণী।
ঈদের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) ওই তরুণী সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, ‘তাঁর আসার খবরে শ্বশুরবাড়ি লোকজন মাসুদকে লুকিয়ে রেখেছে। যদিও মাসুদের পরিবারের লোকজন বলছেন, তাঁদের ছেলে ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত। সেখান থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ফেরেনি।’
ওই তরুণী আরো বলেন, ‘পারিবারিক মতে রাজশাহীর একজনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। পরে জানতে পারি বাড়িতে তাঁর আরেকটা স্ত্রী রয়েছে। এরপর ওই সংসারে আর যাইনি। ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে একটি বিউটি পারলারে কাজ করতাম। ওই সময় মাসুদের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে ওই স্বামীকে তালাক দিয়ে চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল মাসুদকে বিয়ে করি।’
দেড় বছর প্রেম ও বিয়ের পর ঢাকায় তিন মাস সংসার ভালোই চলছিল।হঠাৎ কয়েক দিন পড়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে আমাকে মারধর করে বাসা ছেড়ে চলে যায় সে।
আমার সঙ্গে সব রকমের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ভাড়া বাসার মালিক মারধরের ঘটনা ভয় পেয়ে আমাকে বাসা ছেড়ে দিতে বলেন । বাসা ছেড়ে দেওয়ার পর উপায় না পেয়ে স্বামীর বাড়িতে এসে অবস্থান নিয়েছি। আমি স্ত্রীর মর্যাদা না পেলে এখান থেকে আমার লাশ যাবে বলেও জানান ওই তরুণী।
শ্বশুরবাড়িতে কোন সমস্যা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজনকে দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অসংখ্যবার চেষ্টা করেছে। আমি বের হয়নি। চর-থাপ্পড়ও মেরেছে।আমার স্বামী না আসা পর্যন্ত এখানে যদি মরতে হয়, মরব। ফিরে গেলে আমার মরদেহ যাবে। আমি যাব না।’
মাসুদের বাবা মোহাম্মদ আলী জানান, ‘মেয়েটি এসে আমার ছেলের বউ হিসেবে নিজেকে দাবি করছেন। বিবাহের কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।কাগজপত্র দেখে মনে হচ্ছে বিয়ে করেছে আমার ছেলে। তবে ঢাকা থেকে মাসুদ না ফেরা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।’
মাসুদের মা সুফিয়া বেগম জানান, ‘মেয়েটিকে আমার পছন্দ হয়েছে। তবে শুনেছি মেয়েটির আগে আরেকটা বিয়ে ছিল। ছেলে যদি তাঁকে নিয়ে সংসার করে আমার কোন আপত্তি নেই।এখানে আসার পর তাঁর খাওয়া-দাওয়াসহ সব ধরনের যত্ন আমরা করেছি। তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলেও জানান তিনি।’
ওই নারীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে মোবাইলে জানিয়েছে তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে বিষয়টি মীমাংসার জন্য অভিযোগপত্র দিয়েছি। ঈদের পর বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিয়েছেন।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকালু জানান, ‘মাসুদের বাবাকে বলা হয়েছে দ্রুত সময়ে মাসুদকে বাসায় নিয়ে আসতে। ছেলে ফিরে আসলে আগামী ২৫ জুলাই দুই পরিবারকে নিয়ে বসা হবে।’
উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল জানান, ‘মেয়েটির বাবা আমার কাছে এসেছিল। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’
সূত্র: আজকের পত্রিকা।