ডেস্ক রিপোর্ট:: কোরবানি ঈদে কেনাকাটার জন্য তিন দিন আগে বাবাকে মোবাইলের মাধ্যমে সাড়ে চার হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন মোরসালিন। মা-বাবাকে জানিয়েছিলেন গত ঈদে আসতে পারেননি কিন্তু এবার আসবেন।
এর জন্য কয়েকজন মিলে একটি গাড়িও ঠিক করেছিলেন। কিন্তু বাবাকে দেওয়া সেই কথা রাখা হলোনা তাঁর।
গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় হাশেম ফুডস লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবন থেকে লাফ দিয়ে আহত হন মোরসালিন।হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
মোরসালিনের বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুখদেবপুর গ্রামে। বাবা আনিসুর রহমান পেশায় কৃষি শ্রমিক।
দুই ভাইবোনের মধ্যে মোরসালিন বড়। শনিবার সকালে মোরসালিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় স্বজনদের আহাজারি। বাড়ি ভর্তি লোকজন।
বাড়ি ও এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বারান্দায় বিলাপ করে গড়াগড়ি করছেন মা মোকছেদা বেগম। স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন আর ছেলের কথা বলছেন।
মোরসালিনের বাবা আনিসুর রহমান জানান, “প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে ছেলেকে তাঁর মামার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে কাজের জন্য পাঠান। এর আগে এলাকায় ট্রলিতে হেলপারের কাজ করতেন মোরসালিন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মামা ফোন করে কোম্পানিতে আগুন লাগার খবর দেন।মোরসালিন তিনতলা থেকে লাফ দেওয়ার সময় আহত হয়েছেন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে রাত ১১টায় জানতে পারেন ছেলে আর নেই।”
আনিসুর রহমান বলেন, “আমাদের আর দেখার মতো কেউ থাকল না। বোনটাকে বিয়ে দিয়ে ছেলেটা আমার সংসারটা গোছাচ্ছিল। সেই ছেলেটা আমার চলে গেল। এখনো লাশ আসেনি। ওর মামা বলেছে, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গ্রামে নিয়ে আসবে।”
উল্লেখ্য, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় হাশেম ফুডস লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।” সূত্র: আজকের পত্রিকা