ঢাকাMonday , ১৯ জুলাই ২০২১

যুবকদের যে কারণে দ্রুত বিয়ে করা উচিত

নিউজ পোর্টাল ২৪
জুলাই ১৯, ২০২১ ৫:১০ পূর্বাহ্ন
Link Copied!

অনলাইন ফিচার:: যুবকদের একটি সমস্যা হচ্ছে, বিয়ের ব্যাপারে অনাগ্রহতা। এটি একটি বিরাট সমস্যা। এ থেকে কতশত ক্ষতি তৈরি হচ্ছে, তার পরিসংখ্যান একমাত্র আল্লাহ তা’আলা জানেন। তারা বিয়ে না করার পক্ষে বেশ কিছু অজুহাত তুলে ধরেন।

প্রথম: তাড়াতাড়ি বিয়ে করলে লেখাপড়ায় বিঘ্নতা সৃষ্টি হবে, ভবিষ্যৎ প্লান-পরিকল্পনা ও ক্যারিয়ার ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।

দ্বিতীয়: তাড়াতাড়ি বিয়ে করলে স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের ভরনপোষণ ও খরচাদির দায়িত্ব কাঁধে চেপে যাবে। এসব এখন সম্ভব নয়।

তৃতীয়: যুবকদের বিয়ের ব্যাপারে অনাগ্রহের সবচেয়ে বড় ও জঘন্য প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে, বিবাহের রাস্তায় যুবকদের সাধ্যের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্ব ও বোঝা চাপিয়ে দেওয়া। আমার কাছে এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা ও প্রতিবন্ধক মনে হয়।

এসব সমস্যা ও অজুহাত খুব সহজেই দূর করা সম্ভব, যদি আমাদের সদিচ্ছা ও নিয়াত ঠিক থাকে। এর জন্য আমাদের কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যেমন-

যুবকদের সামনে বিয়ের গুরুত্ব ও মহত্ত্ব তুলে ধরতে হবে। অবহিত করতে হবে এর উপকার, বহুবিধ কল্যাণ ও সাওয়াব এর কথা। ভুল ভেঙে দিতে হবে যে, তাদের উত্থাপিত অজুহাত কল্যাণের তুলনায় কিছুই নয়। দুনিয়ার সবকিছুতেই প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আমি বলছি না যে, বিয়ে একেবারেই সহজ কাজ; কোনো সমস্যা ও জটিলতা নেই। শুধু এটুকু বলতে চাচ্ছি যে, সমস্যা ও জটিলতার তুলনায় কল্যাণ ও উপকার অনেক বেশি। এভাবে যুবকদের সামনে বিয়ের উপকারিতা তুলে ধরলে তারা এতে প্রলুব্ধ হবে। বিয়ে নানান উপকার ও কল্যাণে ভরপুর। যেমন-

এর মাধ্যমে লজ্জাস্থান ও দৃষ্টির হিফাযত হয়। এ সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেছেন, “হে যুবকের দল! তোমাদের যে সক্ষমতা রাখে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। তা দৃষ্টিতে নিচু রাখবে এবং লজ্জাস্থানকে হিফাযত করবে। আর যে সক্ষমতা রাখে না, সে সিয়াম পালন করবে। (সহীহ বুখারী, ৪৭৭৮)

এ হাদীসে রাসূল (সা.) যুবকদের বিয়ে সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এবং বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেছেন, যে যুবকের সামর্থ্য ও সক্ষমতা আছে, সে যেন যুবক বয়সে তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলে। আলহামদুলিল্লাহ্‌, বর্তমানে অধিকাংশ যুবক বিয়ের সামর্থ্য ও সক্ষমতা রাখে। এসব যুবকদের বিয়ে দেরিতে করার কোনো সুযোগ দেখি না। তিনি তাড়াতাড়ি বিয়ে করার উপকার সম্পর্কে বলেছেন, এর মাধ্যমে লজ্জাস্থান ও দৃষ্টি সংরক্ষিত থাকবে।

তাড়াতাড়ি বিয়ে করলে চক্ষু শীতল হয়ে যায়। তখন এদিক সেদিক ঢু মারা লাগে না। হারাম কিছু দেখা লাগে না। মনের কোণে খারাপ ও নোংরা চিন্তা জমতে পারে না। আল্লাহ বিবাহের বরকতে এসব থেকে দূরে রাখেন।

তাড়াতাড়ি বিয়ে করলে মনের হাহাকার দূর হয়ে যায়। তাড়াতাড়ি বিয়ে অন্তরকে প্রশান্তি ও আনন্দের সাগরে ভাসিয়ে রাখে। সুখ, আনন্দ ও ফুর্তি সারাদিন ঢেউ খেলতে থাকে৷ আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জোড়া; যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং সৃজন করেছেন তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সহমর্মিতা।” (সূরা রূম, ২৩)

যুবক তাড়াতাড়ি বিবাহ করলে তার অস্থির, অশান্ত, উত্তেজনাকর ও বিশৃঙ্খল অন্তর এসব থেকে রেহাই পায়। তারা নড়বড়ে ও বিক্ষিপ্ত চিন্তা আবার নতুন করে সাজতে শুরু করে। মনের বসন্তের ছোয়া লাগে। এভাবে সে পরম তৃপ্তি ও আনন্দঘন সময় পার করে।

তাড়াতাড়ি বিয়ের মাধ্যমে ফুটফুটে সন্তান লাভের সৌভাগ্য অর্জন করা যায়। পৃথিবীর অন্যতম চক্ষুশীতলকারী জিনিস ফুটফুটে কিউট সন্তান। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর যারা বলে, হে আমাদের রব আমাদেরকে চক্ষুশীতলকারী স্ত্রী ও সন্তান দান করুন।” (সূরা ফুরকান, ৭৪)

এই আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়, স্ত্রী ও সন্তান চক্ষুশীতলকারী বস্তু; যা অর্জনের একমাত্র উপায় বিবাহ। হাজারো দুঃখ কষ্টের মাঝে সন্তানের মাসুম ও মায়াভরা এবং স্ত্রীর প্রেমময় চাহনিযুক্ত মুখ দেখলে মুহূর্তে সব উবে যায়, বয়ে যায় সুখের হিল্লোল।