কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ সবজি বিক্রেতা, কেউ দোকানের কর্মচারী – News Portal 24
ঢাকাSaturday , ১৭ জুলাই ২০২১

কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ সবজি বিক্রেতা, কেউ দোকানের কর্মচারী

নিউজ পোর্টাল ২৪
জুলাই ১৭, ২০২১ ৮:৪২ পূর্বাহ্ন
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট:: দেশে প্রায় ৫০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ছয় লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। করোনাকালে দেড় বছর ধরে বেতন-বোনাস নেই তাদের। অনেকে পেশা বদল করেও টিকে থাকার সংগ্রামে হিমশিম খাচ্ছেন।

এসব স্কুলে নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের সন্তানরা পড়ালেখা করে। টিউশন ফির টাকায় এসব স্কুলের বাড়িভাড়া, নানা ধরনের বিল এবং শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। এছাড়াও কিন্ডারগার্টেনে খুব কম বেতন পাওয়ার কারণে এসব শিক্ষকরা বাড়তি আয় করতেন।

কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা আর টিউশন ফি দিচ্ছেন না। প্রাইভেট-টিউশনিও বন্ধ। ফলে গত বছরের মার্চ মাস থেকে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের বেতন-বোনাস বন্ধ হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে অনেকে বাধ্য হয়েছেন পেশা বদল করতে। এই শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ সবজি বিক্রি করছেন, কেউ দোকানে কর্মচারীর কাজ নিয়েছেন। বেশির ভাগ এরই মধ্যে তাদের পরিবার-পরিজনকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তার পরও টিকে থাকার সংগ্রামে হিমশিম খাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ‘কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক হলেও তারা যে এলাকায় থাকেন, সে এলাকায় শিক্ষক হিসেবে মর্যাদা পান। ফলে তারা ওই এলাকায় নিচু ধরনের কোনো কাজও করতে পারছেন না। আবার কারো কাছে হাতও পাততে পারছেন না।’

বাংলাদেশে কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্কুল বন্ধের খবর আসছে। যেসব কিন্ডারগার্টেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত, তাদের জায়গা কম লাগায় বাড়িভাড়াও কম। কিন্তু যেসব স্কুল এসএসসি বা এইচএসসি পর্যন্ত, তাদের বাড়িভাড়া অনেক বেশি। অনেক শিক্ষক বা পরিচালক আছেন, যারা ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে স্কুল চালাচ্ছেন। তাদের তো অন্য পেশায় যাওয়ার উপায় নেই! এত দিন তারা সহায়-সম্বল বিক্রি করে বাড়িভাড়া চালিয়েছেন। এখন আর পারছেন না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কিন্ডারগার্টেন না থাকলে সরকারকে আরো ৮০ লাখ শিক্ষার্থীর পড়ালেখার দায়িত্ব নিতে হতো। আরো স্কুল করার প্রয়োজন হতো। মাসে মাসে শিক্ষকদের কোটি কোটি টাকা বেতন দিতে হতো। করোনাকালে সরকার আমাদের ছয় লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর কথা একবারও ভাবল না! আমার অনুরোধ, যদি আমাদের ন্যূনতম অবদানও থাকে, তাহলে দ্রুত আমাদের শিক্ষকদের প্রণোদনা দিন, বেঁচে থাকতে তাদের সহায়তা করুন। উদ্যোক্তাদের বিনা সুদে বা স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করুন।’

আরও পড়ুনঃ  Dialogue between two friends about the causes and effects of water pollution

এদিকে সরকার দুই দফায় নন-এমপিওর ৮০ হাজার ৭৪৭ জন শিক্ষক ও ২৫ হাজার ৩৮ জন কর্মচারীকে সহায়তা দিয়েছে। দুই দফার প্রতিবার শিক্ষকরা এককালীন পাঁচ হাজার টাকা আর কর্মচারীরা আড়াই হাজার টাকা পেয়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় এই টাকা অপ্রতুল হলেও কিছুটা সহায়ক হয়েছে। সম্প্রতি সরকার নিম্নজীবীদের জন্য প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সেখানেও কিন্ডারগার্টেনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।