ঢাকাTuesday , ৬ জুলাই ২০২১

কঠোর লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে বেড়েছে যানবাহন ও মানুষের চলাচল!

নিউজ পোর্টাল ২৪
জুলাই ৬, ২০২১ ৬:৪৫ পূর্বাহ্ন
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট:: সারা দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলছে কঠোর লকডাউন। এদিকে লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা যায় গত কয়েক দিনের তুলনায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল দুটোই বেড়েছে। এর প্রেক্ষিতে যদিও কঠোর অবস্থানে আছেন “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী”।

মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এমন দৃশ্যের দেখা মেলে, আগের মতোই সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে-মোড়ে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর “চেকপোস্ট”। এছাড়া প্রতিটি চেকপোস্টে যানবাহন ও সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে যারা যথাযথ কারণ দেখাতে পারছেন,  কেবল তারাই ছাড় পাচ্ছেন। অন্যথায়, যারা অহেতুক বের হয়েছেন কোনো যৌক্তিক কারণ দর্শাতে না পারায় তাদের মামলা দেওয়া হচ্ছে।

যদিও চেকপোস্টের এলাকাগুলোতে সকাল থেকে ছিল দীর্ঘ যানজট। এর ফলে প্রতিটি গাড়ি চেকপোস্টের লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। তাই লকডাউনেও সড়কগুলোতে দেখা দিয়েছে অনেক যানজট। তাছাড়া আগের তুলনায় মানুষের চলাচল বাড়ায় সড়কে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা।

তবে সড়কগুলোতে জরুরি সেবার নাম করে চলছে অসংখ্য ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাস, আর এর সংখ্যা ছিলো সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া মোটরসাইকেল ও রিকশার সংখ্যাও নগরীতে বেড়েছে। এর পাশাপাশি দেখা যায়, সড়কে মোটরসাইকেল করে দু’জন একসাথে চলাচল করা যাচ্ছে না। যারা কঠোর এই বিধি নিয়ম তোয়াক্কা না করেই মোটরসাইকেল করে দু’জন বসছে তাদের করা হচ্ছে জরিমানা।

রাজধানীর রামপুরা এলাকায় চেকপোস্ট দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় সড়কে যানবাহনের পাশাপাশি আগের তুলনায় বেড়েছে মানুষের চলাচল। এ জন্য অনেক জায়গায় দেখা দিয়েছে যানজট। তবে অযাচিতভাবে অনেকেই বাইরে আসছে। কি জরুরি প্রয়োজনে বাইরে এসেছেন জানতে চাইলে, সাধারণ মানুষ এর যথাযথ যুক্তি ও কারণ কোনটিই ব্যাখ্যা করতে পারছেন না। আর আমরা এই সকল ব্যক্তি এবং যানবাহনের চালকদের আইনের আওতায় এনে মামলা দিচ্ছি।

আরও পড়ুনঃ  জুড়ীতে শাহিনা রেস্টুরেন্টে দুই নারীসহ জনতার হাতে ম্যানেজার আটক

রাজধানীর প্রধান প্রধান সকল সড়কের পাশের অলি-গলিতে থাকা দোকানপাটগুলো আগের চেয়েও বেশি খোলা দেখা গিয়েছিল। এদিকে মানুষের চলাচলও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বেড়েছে চায়ের দোকানে লোকেদের আড্ডাও।

বেসরকারি একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন জুনায়েদ আহমেদ, তাঁর সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, সাধারণ মানুষ দীর্ঘক্ষণ ঘরে বসে থাকতে চাচ্ছেন না। সবাই কোনো না কোনো জরুরি প্রয়োজন দেখিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন। কিন্তু আসলে কয়জনেরই জরুরি কাজ আছে সেটাই দেখার বিষয়। প্রশাসন যদি সাধারণ মানুষের অপ্রয়োজনে অবাধ চলাচল বন্ধ না করতে পারে তাহলে এ ধরনের কঠোর লকডাউন দিয়ে কোনো লাভ হবে না।

এদিকে মালিবাগ এলাকায় রিকশা চালক নুরুল আমিন বলেন, গতকাল থেকেই তিনি দেখেছেন সকাল বেলার দিকে সড়কে অনেক মানুষের চলাচল। তবে কিছু ভাড়া মারতে পারছি। সন্ধ্যার পরে যাত্রী একেবারেই পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে লকডাউনে ভালো কোনো ইনকাম না হওয়ায় আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষদের কষ্টের মধ্যেই দিনযাপন করতে হচ্ছে। এদিকে রাস্তায় চলাচল করা প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেশিই দেখে মনে হয় না দেশে কোনো লকডাউন চলছে।

সরকার সারাদেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চলমান কঠোর লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত করেছে। আর এই সময় আগের সব বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে জারি করা হয়। তবে বর্তমানে সারাদেশে বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও অন্যান্য গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।