ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি:: সিলেটের ওসমানীনগরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘ ১০ দিন ধরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায় রয়েছেন আরশ আলী (৫৫)। তিন মাসের ব্যবধানে হত্যার উদ্দেশ্যে একই পরিবার কর্তৃক দুইবার আরশ আলীকে হামলা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই বিকাল ৫টায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের তাজপুর-বালাগঞ্জ সড়কের মির্জাপুর গ্রামের রাস্তার মুখে আরশ আলীর মালিকানায় নির্মানাধীণ ভবনে মির্জাপুর গ্রামের মুজাম্মিল আলীর ছেলে মোহন মিয়া (২৮) গংদের নেতৃত্বে ১৫/১৬জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একই গ্রামের মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার আলী ওরপে আরশ আলীর উপর হামলা চালায়।
হামলায় সুলপি, লোহার রডের আঘাতে আরশ আলীর হাত, দুই উরু, বাহু ও নিতম্বের উপর মারাত্মক জখম হয়। চিৎকার শোনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আহতকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পর গত ২২ জুলাই আহতের ছেলে সাইদুল ইসলাম (২২) বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঐদিনই অভিযোগটি মামলায় (মামলা নং-১৬) নথিভূক্ত করেন।
গ্রামের বাসিন্দা মনোহর আলী (৫৫) জানান, আরশ আলী মির্জাপুর জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী এবং প্রতিপক্ষ আবু জাফর মুজেফর আলী ঐ মসজিদের ক্যাশিয়ার। আরশ আলীসহ গ্রামের মুসল্লিরা দীর্ঘ দিন ধরে মসজিদের টাকার হিসাব চান। এই নিয়ে গত ৫ রমজানেও আরশ আলীকে মুজেফর গংরা মারধর করে। গত ১৯ জুলাই সে আবার দলবল নিয়ে আরশ আলীর নির্মাণাধীন ভবনের ভিতরে এসে হামলা করে। এ ঘটনার জের ধরে তারা একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমার ছেলেকে আসামি করেছে। এটা খুব ন্যাক্ষারজনক।
একই গ্রামের বাসিন্দা শমসের আলী (৪৫) জানান, তাদের দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ রয়েছে। আরশ আলী নতুন ভবন তৈরী করছেন। গত ১৯ জুলাই আমাদের সামনে মোহনের নেতৃত্বে ১৫/১৬জনের একটি গ্রুপ আরশ আলীর উপর হামলা করেন। আমরা বাঁধা দিয়ে রক্ষা করতে পারিনি।
মামলার বাদী সাইদুল ইসলাম জানান, আমার বাবা মসজিদের মোতাওয়াল্লী থাকায় ক্যাশিয়ার মুজেফর আলীর নিকট মসজিদের টাকার হিসাব চান। এই নিয়ে মুজেফর গংরা গত ১৮ এপ্রিল (৫ রমজান) মসজিদের ভিতরে আমার বাবার উপর অতর্কিত হামলা করে। আমরা নতুন একটি ভবন তৈরি করছি। এ ভবন তৈরি করতে হলে তারা আমাদের কাছে ৫লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। ২৭ এপ্রিল আমরা বিষয়টি ডিআইজি বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছি। গত ১৯ জুলাই বিকালে আবার মোহন গংরা আমার বাবার উপর হামলা করে। আমার বাবার অবস্থা আশংকাজনক। আমরা বাবাকে নিয়ে শংকায় রয়েছি।
ওসমানীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ শ্যামল বণিক বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা নেয়া হয়েছে। আসামি ধরতে অভিযান চলছে।