বিয়ের কত দিন পর সন্তান নেওয়া ভালো? কোন বয়সে বাচ্চা নেওয়া উচিত? জানুন বিস্তারিত – News Portal 24
ঢাকাSaturday , ১৯ জুন ২০২১

বিয়ের কত দিন পর সন্তান নেওয়া ভালো? কোন বয়সে বাচ্চা নেওয়া উচিত? জানুন বিস্তারিত

নিউজ পোর্টাল ২৪
জুন ১৯, ২০২১ ৮:০৩ পূর্বাহ্ন
Link Copied!

হেলথ ডেস্ক:: বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই মেয়েদের যে কথাটি শুনতে হয় সেটি হচ্ছে, “সন্তান নিচ্ছেন কবে?” সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তটি এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ । কেননা- ক্যারিয়ার, পড়াশোনা, দাম্পত্য জীবন গুছিয়ে নেওয়া ইত্যাদি হিসাব-নিকাশ করে আধুনিক নারীরা সন্তান নিতে চান।

বিয়ের মাধ্যমে নারীর সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগতে প্রবেশ। নতুন এই পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর আগেই যেন তাকে নতুন আরেক পরিবেশে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রতিটি নারীর জীবনে বিয়ের চেয়েও সন্তান নেওয়ার মধ্যদিয়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। সন্তান নেওয়ার আগে প্রত্যেক নারীর শারীরিক ও মানসিক পূর্ণ বিকাশ প্রয়োজন। অল্পবয়সে সন্তান নিতে গিয়ে অনেক নারীকেই অকালে প্রাণ হারাতে হয়।

অনেক সময় নিজেদের ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যতের চিন্তা থেকে বাচ্চা নিতে বেশি দেরি করলে তা সন্তান না হওয়ার পেছনে কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক বিয়ের কত দিন পর সন্তান নেওয়া উত্তম।

আগে মনে করা হতো, ২০ বছরের আগে প্রথম সন্তান নেওয়া ভালো। এখন সময় বদলেছে। মেয়েরা ক্যারিয়ারের জন্য কিছুটা দেরিতে বিয়ে করছে। তবে এখনো চিকিৎসকেরা বলেন, প্রথম সন্তানটি ২৫ বছর বয়সের আগে নিলে ভালো। সমীক্ষা বলে, ৩০ বছর পেরিয়ে গেলে প্রজননক্ষমতা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়। ৩৫ বছরে পর ডিম্বাণুর সংখ্যা কমে যায় আরও বেশি। এ ছাড়া এ বয়সে গর্ভধারণের পরে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, প্রসব-পূর্ব রক্তক্ষরণ ও প্রসবকালীন জটিলতা বেড়ে যায়। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো, জন্মগত ত্রুটিযুক্ত এবং ডাউন সিনড্রোম সন্তান জন্মদানের হার অনেক বেশি হয়, যদি মায়ের বয়স বেশি থাকে। এসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসবে হার কমে যায় এবং অস্ত্রোপচারে জন্ম বেশি হয়।

অনেকে প্রথম সন্তানটি নেওয়ার পর ক্যারিয়ার গুছিয়ে নিতে একটু দীর্ঘ বিরতি নেন। পরে মা হওয়ার জন্য কয়েক মাস চেষ্টার পরেই অনেকে অধৈর্য হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে। তারপর প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

তবে সুস্থ শিশু জন্মদানের জন্য স্বামী-স্ত্রী দুজনের বয়সের দিকেই খেয়াল রাখা উচিত। নারীদের ৩০ বছরের মধ্যে এবং পুরুষদের ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথম সন্তান নিয়ে নেওয়া ভালো। তারপরও একটু বেশি বয়সে সন্তান নিতে হলে একজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে থাকা ভালো, কেননা এই গর্ভধারণগুলোতে জটিলতা হতে পারে।

নববিবাহিত দম্পত্তির প্রথম সন্তান কবে নেয়া উচিত এবং প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তানের মধ্যে সময়ের পার্থক্য কত হওয়া উচিত সে সম্পর্কে জানতে কথা হচ্ছিল ওজিএসবির (অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনেকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ) প্রেসিডেন্ট ও হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনেকোলজিক্যাল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগমের সাথে।

তিনি বলেন , ‘আমাদের দেশে বাল্য-বিবাহের হার এখনো অনেক বেশি। তাই নারীদের ক্ষেত্রে প্রথম যেটা লক্ষ্য রাখতে হবে তা হলো বিয়ে যেন ১৮ বছরের পর এবং সন্তান যেন কখনই ২০ বছরের আগে না হয়। ২০ বছরের আগে নারীর শারীরিক বৃদ্ধি সম্পূর্ণ হয় না। ফলে এর আগে সন্তান নিলে বাচ্চার নানা ধরনের অপুষ্টিজনিত রোগ ও সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকসময় অ্যাবোরসন হয়ে যায়। বাচ্চার বডি স্ট্রাকচার ঠিক মতো হয় না। শিশু হতে গিয়ে মাথা আটকে যায়।’

আমাদের দেশে একজন অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করে বিয়ে করলে তার বয়স ২৫ পেরিয়ে যায়। বিয়ের পর একবছর ঘোরাঘুরি করতে করতেই কেটে যায়। তাই ২৬ বছরের পর দেরি না করে সন্তান নিয়ে নেওয়া উচিত। দুই সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মাঝে দুই থেকে তিন বছর পার্থক্য রাখা উচিত।

যা মায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য দরকার। ৩৫ বছর পেরিয়ে গেলে দেখা যায় সন্তান আর হতে চায় না। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এসব নানা রোগ দেখা যায়, আর বাচ্চা এবনরমাল হওয়ার আশংকাও থাকে।

তাই প্রথম সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে মায়ের বয়স কত, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মেয়ের বয়স ২০ বা ২১ বছর হলে তার কিছুদিন অপেক্ষা করে সন্তান নেওয়া উচিত। কিন্ত মেয়ের বয়স ২৮ হয়ে গেলে ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে দেরি করা উচিত না। আমার কাছে প্রতিদিন অনেক রোগী আসে। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগরের এমন অনেক মেয়েকে পাই যে ১৮ বছর বয়সেই দুই বাচ্চার মা। বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করি, এত কম বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কেন? বাচ্চা নিতে দিলেন কেন? তাদের সহজ সরল উত্তর থাকে- যেমন, অনেক ভালো জামাই পেয়েছি, মেয়ে বেশি সুন্দরী, রাখতে পারিনি। মেয়ের বাচ্চাও নিতে হয় স্বামীর ইচ্ছায়। অল্প বয়সে মা হলে বাচ্চা ও মা দুজনেরই ক্ষতি হয়। অনেক সময় বাচ্চা মারাও যায়।

এজন্য প্রতি বছর আমাদের দেশে প্রায় ৮৩ হাজার সন্তান হতে গিয়ে এবং ৬ হাজার মা বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। এটা একটা ভয়ংকর অবস্থা। একমাত্র বাল্যবিবাহ রোধ ও উপযুক্ত বয়সে সন্তান নিলে এ হার কমতে পারে। কখনো কখনো শহরে দেখা যায় বিদেশে পড়তে যাবে বা চাকরির কথা চিন্তা করে নারীরা প্রথম সন্তান নষ্ট করতে চান।

কিন্তু প্রথম সন্তান কখনোই নষ্ট করা যাবে না। তাই প্রতিটি নবদম্পত্তির প্রথম সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের সাথে কাউন্সেলিং করা দরকার এবং সে পরামর্শ অনুযায়ী সন্তান নেওয়া উচিত।

বিয়ের পর বাচ্চা নেওয়ার প্রস্তুতি

নিজের প্রজনন চক্র সম্বন্ধে জ্ঞান রাখা

একজন নারী বয়ঃসন্ধির পর যখন তার প্রজননকালে প্রবেশ করে তখন সে খুব সচেতনভাবেই জানে তার মাসিকের হিসাব। প্রতি মাসে গর্ভাশয় থেকে একটি নির্দিষ্ট দিনে ডিম্বপাত হয় । ডিম্বাশয় একটি নলের মাধ্যমে জরায়ুর সঙ্গে সংযুক্ত থাকে , এটির নাম “ফেলোপিয়ান টিউব বা ডিম্বনল” । স্বামীর সঙ্গে সহবাসের পর শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ডিম্বাণুটি এই নলে অবস্থান করে। কিন্তু এখানে মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য ডিম্বাণুটি অপেক্ষা করে। এর মধ্যে যদি শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিত হতে পারে, তাহলে ডিম্বাণুটি নিষিক্ত হয়ে জাইগোটে পরিণত হয়। পরবর্তীকালে তা ফেলোপিয়ান টিউবের মধ্য দিয়ে এগিয়ে এসে জরায়ুর গায়ে সংযুক্ত হয়ে ভ্রুণে পরিণত হয় এবং আরও বৃদ্ধি পেয়ে ধীরে ধীরে মানুষের আকৃতি লাভ করে। এই পর্যায়ে ওই নারী বুঝতে পারে যে সে মা হতে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় ডিম্বপাতের ২-১ দিন আগে স’হ’বাস করলে ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ , শুক্রাণু সাধারণত সর্বোচ্চ ৫ দিন পর্যন্ত নারীদেহে জীবিত থাকে ।

কিন্তু যদি শুক্রাণুর সঙ্গে ডিম্বাণু এই নির্দিষ্ট ১২-২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিলিত না হয়, তাহলে নিষেক হবে না এবং গর্ভধারণও হবে না। তখন ডিম্বাণুটি কর্পাস লুটিয়াম নামক এক হলদে রঙের পদার্থে পরিণত হয় এবং জরায়ুর অন্তর্গাত্র ঝরে পড়ে , যা পরে মাসিকের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় । কাজেই বিয়ের পরই বাচ্চা নিতে চাইলে একজন নারীকে জানতে হবে তার মাসিকের সময়সূচি এবং প্রজনন বা উর্বর সময় যখন সহধর্মীর সঙ্গে সে মিলিত হবে।ডিম্বপাতের ওই নির্দিষ্ট সময়ে সহবাস করলে একজন নারীর মা হতে কোনো অসুবিধা হবে না । এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

মাসিকের হিসাব

মাসিকের তিনটি পর্যায় আছে । ঋতুস্রাব, বৃদ্ধি পর্যায় এবং ক্ষরণ পর্যায়। সংক্ষেপে বলতে রক্তপাতের মাধ্যমে মাসিকের হিসাব শুরু । এটা ঋতুস্রাব পর্যায় যা ২-৫ দিন সাধারণত স্থায়ী হয়। এরপর জরায়ুর অন্তঃপ্রাচীর নতুন করে বেড়ে উঠতে শুরু করে , পুরু হয়, রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে ডিম্বপাত হয় , তাই সফল যৌনমিলনের ফলে সন্তান ধারণ করার সম্ভাবনা এই সময়ে সর্বাধিক। এই পর্যায়ের সময়কাল ৭-১০ দিনের মতো। ডিম্বাণু যদি নিষিক্ত না হয় , সে ক্ষেত্রে শেষ পর্যায়ে অনিষিক্ত ডিম্বাণুটি কর্পাস লুটিয়ামে পরিণত হয় , এই পর্যায়ের শেষে জরায়ু সর্বাধিক পুরু হয় এবং মাসিকের জন্য প্রস্তুত হয়। যদি নিষিক্ত হয়, সে ক্ষেত্রে উৎপন্ন জাইগোটটি জরায়ুর অন্তর্গাত্রে স্থাপিত হয় বা ইমপ্লান্টেশন হয় এবং গর্ভকালীন সময় এগিয়ে যেতে থাকে। এই সময় শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। মাসিকের পুরোটাই কিছু হরমোন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়। ল্যুটেনাইজিং হরমোন, প্রজেস্টেরন , ইস্ট্রোজেন , ফলিকুলার স্টিমুলেটিং হরমোনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, মূলত এসব হরমোনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে মাসিক সম্পূর্ণ চাক্রিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। মাসিকের নবম দিনের আগে এবং ২০তম দিনের পর স’হ’বাস করলে গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনা একদমই থাকে না । একে বলা হয় নিরাপদ সময়কাল । ১২তম থেকে ১৬তম দিনের মাঝের সময়টা উর্বর সময়, ফলে এই সময়কালে স’হ’বাস গর্ভসঞ্চারের জন্য খুবই সহায়ক ।

মানসিক প্রস্তুতি

স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করতে হবে যে আসলেই তুমি সন্তান নিতে আগ্রহী কি না। কেননা , বিয়ে যেমন জীবনে এক আকস্মিক পরিবর্তন করে অনেক দায়িত্ব অর্পণ করে দেয়, তেমনি সন্তান আসার ফলে এই দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। তাই মানসিক প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এখন অনেক নারী ঘরের পাশাপাশি বাইরের অনেক কিছু সামলায় , অনেকে চাকরি করে। এমন কর্মজীবী নারীদের জন্য সন্তান লালনপালনের জন্য পর্যাপ্ত সময় ও সুবিধা আছে কি না , তাও তাদের বিবেচনা করতে হবে। সন্তান যদি মায়ের ভালোবাসা আর আদর থেকে কোনোভাবে বঞ্চিত হয় তাহলে তার ভবিষ্যৎ অনেকটাই মার্জিত আর স্বাভাবিক থাকে না। এ ছাড়া অনেক নারীর পড়ালেখার মাঝেই বিয়ে করে , তাদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা ও ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ হিসাব করে বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে ।

আর্থিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া

একটি বাচ্চা মানে নতুন একটি মুখ, নতুন করে খরচ বৃদ্ধি। বর্তমানের যান্ত্রিক জীবনে সবকিছুই অনেক ব্যয়বহুল। প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের তুলনায় একটি বাচ্চার খরচ বরং অনেক বেশি। সন্তান ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হলেই কেবল বাচ্চা নেওয়ার কথা চিন্তা করা উচিত। আর্থিক সংগতির জন্য প্রয়োজনে বেশ কিছুটা সময় নিলে তা নিরাপত্তার জন্য সহায়ক হবে । বাচ্চা পেটে এসেছে নিশ্চিত হওয়ার থেকে চেকআপ, খাবার , গর্ভাবস্থার যত্ন , ডেলিভারি , প্রসব-পরবর্তী যত্ন, নবাগতের যত্ন ও তার স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য অন্যান্য খরচ তো আছেই । একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তাই বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনার আগে থেকেই জমিয়ে রাখা উচিত। শারীরিক প্রস্তুতি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি যদি নেওয়া থাকে , তাহলে তা চিকিৎসকের পরামর্শমতো বাদ দিতে হবে। পারিবারিক কোনো রোগের ইতিহাস যেমন : উচ্চ রক্তচাপ , ডায়াবেটিস , শ্বাসকষ্ট , যক্ষ্মা ইত্যাদি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ব্যাবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া কোনো যৌনরোগে যেমন, এইচআইভি সংক্রমণ, সিফিলিস, গনোরিয়া, হার্পিসে আক্রান্ত থাকলে বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত । গর্ভাবস্থায় অন্তত ৪ বার চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে চেকআপের জন্য। টিটি টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করতে হবে শিশুর জন্মপরবর্তী ধনুষ্টংকার প্রতিরোধ করার জন্য। অন্য কোনো টিকা নিলেও গর্ভধারণের জন্য অন্তত এক মাস অপেক্ষা করতে হবে। নিয়মমতো সুষম খাবার ও পর্যাপ্ত পানিপান এবং ভিটামিন-ডি, সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড খেতে হবে। যদি কোনো কারণে দেখা যায় যে অনেক চেষ্টার পরও বাচ্চা হচ্ছে না সে ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েরই কিছু পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন যে কোনো একজন বা উভয়েই বন্ধ্যা কিনা। অতঃপর তদনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো। এ ছাড়া ক্যানসারের আশঙ্কা থাকলে প্যাপ টেস্ট করাতে পারো চিকিৎসক জরায়ুমুখের কর্কটরোগ শনাক্তকরণের জন্য। চিকেন পক্স, রুবেলা, হাম বা মিজেলস- এসব রোগ থাকলেও বাচ্চা নেওয়ার কথা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

পারিবারিক স্থিতিশীলতা

স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মা , ভাইবোন ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে একটা সুসম্পর্ক বজায় রাখা উচিত । বিয়ের পরই একজন নারী সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে চলে আসে। কাজেই স্বামীর উচিত হবে স্ত্রীকে মানিয়ে চলতে সাহায্য করা। ভবিষ্যৎ সন্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এটি ।

সর্বোপরি একজন নারীর নারীত্বের পূর্ণতা আসে সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে । বিয়ের পর সবচেয়ে আপন মানুষ স্বামীর সঙ্গে কথা বলে পারস্পরিক বোঝাপড়ার পর পরিকল্পনা করে নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে বাচ্চা নেওয়া উচিত। একটি সুখী পরিবার একটি সুখী দেশের একক । ছেলে হোক মেয়ে হোক একটি সন্তানই যথেষ্ট ; এই মূলমন্ত্র নিয়ে নবদম্পতির উচিত হবে এগিয়ে যাওয়া। তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।