ডেস্ক রিপোর্ট:: গেজেটে নাম না থাকায় নয় মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না সিরাজগঞ্জের তাড়াশের বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী। ভাতা বন্ধ থাকায় তাঁকে অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হচ্ছে।এমনকি নিজের হাঁপানি রোগের ওষুধও কিনতে পারছেন না।
উপজেলার তালম ইউনিয়নের কুন্দাশন গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী বলেন, আমি ১৯৭১ সালে ৭ নম্বর সেক্টর কমান্ডার লে: কর্ণেল কাজী নুরুজ্জামান (অব.) অধীনে যুদ্ধ করেছি। আমার এফ এফ নম্বর-২৯৫৭। জাতীয় তালিকায় ৮০। আমাকে সরকার সম্মান দিয়েছে, একটা ঘর দিয়েছে, সামন্য জমিও দিয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা পেলেও হঠাৎ ৯ মাস ধরে কোন ভাতা পাচ্ছি না।
মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটে তাঁকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি হাঁপানি রোগে আক্রান্ত। ঠিকমতো ওষুধ কিনতে পারছি না। অনেক সময় খেয়ে না খেয়েও দিন যাচ্ছে। গেজেট ভুক্ত করে আমাকে সম্মানী ভাতা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’
জানা যায়, মুনসুর আলী ভারতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর ফ্রিডম ফাইটার (এফ এফ) নম্বর-২৯৫৭। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি কর্তৃক ২০১৭ সালে তাঁকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে সে তথ্য মন্ত্রণালয়/জামুকাতে পাঠায়। যাচাই-বাছাই তালিকায় প্রথমে তাঁর নাম থাকলেও এখন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি। গেজেটভুক্তির জন্য তিনি ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেছেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আরশেদুল ইসলাম বলেন, মুনসুর আলী একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এ ছাড়াও তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করেছেন। কিন্তু, এমআইএস রিপোর্টে তাঁর নাম যায়নি, যেহেতু এমআইএস তালিকা ভুক্ত না তাই সাময়িক ভাবে সম্মানী ভাতা বন্ধ আছে। তালিকা ভুক্ত হলে তিনি আবার ভাতা পাবেন। পূর্বের যাচাই বাছাইতে মুনসুর আলীর নাম প্রথমে আছে।
এমআইএস-এ অন্তর্ভুক্তির জন্য তিনি আবেদন করেছেন। গত ২১ জুন তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে তাঁর নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা পাওয়ার জন্য এখন এমআইএস তালিকাভুক্তি প্রয়োজন।