স্টাফ রিপোর্টার:: অনুসন্ধানমূলক জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা অগ্রযাত্রা’র অপরাধ অনুসন্ধান বিভাগ ‘অগ্রযাত্রা এন্টি ক্রাইম ইউনিট’-এর তৎপরতায় নিষিদ্ধ বিট কয়েন ও ক্রেডিট কার্ড হ্যা’কা’র চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব।
গত ৩ মাস ধরে অনলাইনে ও অফলাইনে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিষিদ্ধ বিটকয়েন কারবারীদের ওপর অনুসন্ধান শুরু করে অগ্রযাত্রা’র এন্টি ক্রাইম ইউনিট।
এরপর ছদ্মবেশে বিট কয়েন নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী সেজে নিষিদ্ধ এ কারবারীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে অগ্রযাত্রা’র অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা। এমনকি নিষিদ্ধ বিট কয়েনের এ শক্তিশালী সিন্ডিকেটটি নিয়ে গভীর অনুসন্ধানের স্বার্থে অগ্রযাত্রা’র এন্টি ক্রাইম ইউনিটের সাংবাদিকরা একাধিকবার ঢাকা, মাদারীপুর, ও ফরিদপুরে বিটকয়েন চক্রটির সাথে কৌশলে দেখা করে। এতে বহু নতুন তথ্য অগ্রযাত্রার হাতে আসে। যেমন এই চক্রটি ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ বিট কয়েনের সিন্ডিকেট তৈরি করতে থাকে। দল ভারী করার উদ্দেশ্যে সারাদেশের অন্তত ৫০ জন তরুণকে ভুলভাল বুঝিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিষিদ্ধ বিট কয়েন সিন্ডিকেটে যোগ দিতে বাধ্য করে। এছাড়া বাংলাদেশে নিষিদ্ধ বিটকয়েন চক্রের অন্যতম প্রধান মাস্টারমাইন্ড হামীম গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রশিক্ষণের আড়ালে বেআইনিভাবে বিট কয়েন ও ক্রেডিট কার্ড হ্যা’কিংয়ে’র প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিলেন।
চক্রটি শুধু বাংলাদেশেই নয়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষিদ্ধ সিন্ডিকেটের সাথেও যুক্ত ছিলো বলে অগ্রযাত্রা’র অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।
সম্প্রতি মরণঘাতি মা’দ’ক এল’এস’ডি ও আ’ই’স সহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ দ্রব্য বিট কয়েনের মাধ্যমে কেনা হয়েছিলো। এছাড়া বিট কয়েনের মাধ্যমে অস্ত্র ও মাদক কেনা বেচা, মানি লন্ডারিং, খুবই সহজ। বিভিন্ন অপরাধীদের প্রথম পছন্দ নিয়ন্ত্রণহীন বিট কয়েন।
তাই বিট কয়েন সিন্ডিকেট সনাক্তে তৎপর হয় অগ্রযাত্রা’র এন্টি ক্রাইম ইউনিট। অগ্রযাত্রার টানা অনুসন্ধানে প্রাপ্ত সকল তথ্য র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-৪ কে পাঠানো হয়৷ র্যাব-৪ গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে অগ্রযাত্রা’র এন্টি ক্রাইম ইউনিটের দেয়া তথ্য যাচাই করে নিষিদ্ধ বিট কয়েন চক্রটির বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়।
অগ্রযাত্রা’র তথ্যগত সার্বিক সহযোগিতায় অবশেষে গত ১৯ জুন রাজধানীর দারুসসালাম এলাকা থেকে নিষিদ্ধ বিট কয়েন সিন্ডিকেটটির প্রধান মাস্টারমাইন্ড হামীম প্রিন্স ও তার চক্রের ৩ সহযোগী রাহুল সরকার, সঞ্জীব দে তিতাস, ও সোহেল খানকে বিট কয়েনের লেনদেন করার সময় হাতে নাতে আটক করতে সক্ষম হয় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল।
এসময় বিট কয়েনের অসংখ্য ভার্চুয়াল ওয়ালেট সনাক্ত করে র্যাব। এছাড়া জব্দ করা হয় নিষিদ্ধ বিট কয়েন কারবারের কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ও ক্রেডিট কার্ড।
র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকে জানান, শুধুমাত্র চলতি মাসেই দেড় কোটি টাকা নিষিদ্ধ বিট কয়েনে লেনদেন করেছে চক্রটি।২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে বিট কয়েনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাচার করে আসছিলো চক্রটি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ বিট কয়েন ব্যবহার করে অনেক অপকর্ম হচ্ছে। তাই নিষিদ্ধ বিট কয়েন কারবারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে র্যাব।
অগ্রযাত্রা’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মেহেদী হাসান অর্নব বলেন, অগ্রযাত্রা অনলাইন কিংবা অফলাইনে সকল প্রকার অপরাধের বিরুদ্ধে গভীর অনুসন্ধানী তৎপরতা চালায়। এবং সেসব তথ্য প্রকাশ ও প্রশাসনকে দিয়ে অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। অগ্রযাত্রা সাহসী সাংবাদিকতার এই ধারা অব্যাহত রাখবে ইনশাআল্লাহ।