মুহাম্মাদ রাব্বি, স্টাফ রিপোর্টার:: কি শীত কি গরম- সারা বছরই নগরবাসীকে মশার কামড় খেতে হয়। শহরের এখানে-ওখানে খানাখন্দ, খোলা ম্যানহোল, পয়োনালা, অর্ধনির্মিত দালান, আবর্জনায় ভরা। এসব জায়গায় মশা বংশ বিস্তার করে চলেছে। এসব মশা থেকেই প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে চলেছে। এসব রোগে মৃত্যুর হারও কম নয়।
মশাবাহিত রোগগুলোর মধ্যে এক সময় বাংলাদেশে ম্যালেরিয়াই বেশি পরিচিত ছিল৷ তখন এই ম্যালেরিয়া আতঙ্ক ছিল ঘরে ঘরে৷ এখনো বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকায় ম্যালেরিয়ায়ার প্রাদুর্ভাবের কথা শোনা যায়৷ সেখান থেকে মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়৷ তারপর আসে ডেঙ্গু৷ এই ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী হলো এডিস মশা৷ ডেঙ্গুর পরে এখন চলছে চিকুনগুনিয়া জ্বরের প্রাদুর্ভাব৷ এই জ্বরে বাংলাদেশে কেউ মারা গেছে বলে চিকিৎসকরা স্বীকার না করলেও, এ রোগ ভোগাচ্ছে মানুষকে৷ হাড়সহ শরীরের গাঁটে গাঁটে ব্যাথায় কাতর হচ্ছেন আক্রান্তরা৷ ‘চিকুনগুনিয়া’ নাকি আফ্রিকান ভাষা৷ আর এর অর্থ হচ্ছে, ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে যাওয়া৷ আসলেই ব্যাথায় ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে যাচ্ছেন রোগীরা৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকুনগুনিয়াসহ তিন ধরনের রোগের জন্য দায়ী এডিস মশা৷ এই মশার প্রজনন ঘরবাড়িতে৷ তারা কামড়ায় দিনের আলোতেও।ঢাকা সিটি করপোরেশন মশা বাহিত সমস্যা জন্য কয়েক বারই মশা মারার ওষুধ দিয়ে যায় কিন্তু তাতে কোন প্রকার উপকার হচ্ছে না। শহরবাসীরা ভোগচ্ছে মশা বাহিত সমস্যা।
ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার জন্য সাধারণত মানুষের জ্বর হয়ে থাকে বর্তমানে করোনার কারনে জ্বর হলেও ডাক্তার কাছে যেতে চাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। ডাক্তার কোন প্রকাশ চিকিৎসা ছাড়াই আগে করোনার পরিক্ষা করতে বলে থাকে। অনেকে ভয়ের কারনে রোগ নিয়ে ভোগচ্ছে কিন্তু চিকিৎসা নিচ্ছে না। এই কারনের জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশন দৃষ্টি আকর্ষণ করছে যেন মশা প্রতিরোধে আরও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক খাজা নাজিমুদ্দিন জানান, মশার কামড় থেকে আত্মরক্ষাই সবচেয়ে বড় সমাধান। বসন্তকাল থেকে শুরু হয় মশাবাহিত অসুখ-বিসুখের প্রকোপ, বর্ষাকালে সবচেয়ে বাড়ে। মশা থেকে বাঁচতে হালকা রঙের কাপড় পরবেন, ফুলস্লিভ হলে ভালো। বাড়িতে নেট ব্যবহার করতে পারেন।
রাতে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করবেন। শিশুরা ঘুমালে দিনেও তাই। পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে গেলে অবশ্যই সাবধান থাকবেন, সঙ্গে ফুলহাতা জামা ও মশা তাড়ানোর ওষুধ নেবেন। বাড়িঘরের আশপাশে বদ্ধ পানি নিয়মিত সাফ করবেন। টবের নিচে, এসির নিচে জমে থাকা পানি পরিষ্কার রাখবেন। প্রয়োজনে পাড়ার সবাই মিলে নিজেদের আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং পানি ও আবর্জনামুক্ত রাখার বিষয়ে একতাবদ্ধ হোন।