অনলাইন ডেস্ক:: বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫১৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে চার মাস নয়দিনে বিভাগে ৫০ হাজার ৩৮৩ জন আক্রান্ত হলেন।
রোববার (০৯ মে) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভাগীয় পরিচালক- ডা. বাসুদেব কুমার দাস।
তিনি বলেন, ‘৪০টি উপজেলায় শুরুতে ১৮টি উপদ্রুত অঞ্চল চিহ্নিত করে মেডিকেল টিম কাজ করেছে। বর্তমানে এলাকা বাড়িয়ে ২৭টি করা হয়েছে। এসব অঞ্চলে ৪০৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে মানুষকে সচেতন করতে ব্যাপকভাবে কাজ চলছে।’
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর জানায়, ‘১লা জানুয়ারি থেকে ৯ মে পর্যন্ত বরিশালে ছয় হাজার ৭৬৭ জন, পটুয়াখালীতে ১০ হাজার ৫৫১ জন, ভোলায় ১৩ হাজার ১১৫ জন, পিরোজপুরে ছয় হাজার ৪১২ জন, বরগুনায় সাত হাজার ৯৪৪ জন, ঝালকাঠিতে পাঁচ হাজার ৫৯৪ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিভাগে এখন পর্যন্ত ১৯ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে বরিশালের পাঁচজন, পটুয়াখালীর সাতজন, ভোলার দুজন এবং বরগুনার পাঁচজন। আক্রান্তের মধ্যে ৪৯ হাজার ৫৫৬ জন সুস্থ হয়েছেন।’
বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, ‘আক্রান্তের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে শূন্যের কোটায় চলে আসবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। মানুষ সচেতন হয়েছে বিধায় দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। ডায়রিয়া মোকাবিলায় পর্যাপ্ত আইভি স্যালাইন মজুত আছে। এর মধ্যে এক হাজার সিসির ৬৪ হাজার ৩০৭ পিস এবং ৫০০ সিসির ৩৩ হাজার ৩৭৮ পিস স্যালাইন মজুত আছে।’ সূত্র: ঢাকা পোস্ট
ডায়রিয়া হলে করণীয় কি?
গরমকালের মতো শীতকালেও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বিশেষ করে রোটা ভাইরাসের কারণে এসময় যে কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। তবে বড়দের তুলনায় শিশুদের এ সময় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। কখনও কখনও এই রোগ প্রাণঘাতীও হয়। তাই ডায়রিয়া হলে অবহেলা করা ঠিক নয়।
ডায়রিয়া হলে কিছু কিছু খাবার রোগীকে সুস্থ হতে সাহায্য করে। আবার এমন কিছু খাবার আছে যা এসময়ে এড়িতে চলা উচিত। এজন্য এসময় খাবারের ব্যাপারে সাবধান হওয়া প্রয়োজন।
ডায়রিয়া হলে অবশ্যই বারবার খাওয়ার স্যালাইন খেতে হবে। যেহেতু এসময় শরীর থেকে অনেক তরল পদার্থ বের হয় তাই রোগী দুর্বল হয়ে যেতে পারে। একারণে এ সময় রোগীদের ব্লেণ্ড করা বা নরম খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
ডায়রিয়া ভাল না হওয়া পর্যন্ত সিরিয়াল ধরনের খাবার যেমন-ওটমিল, পরিজ খেতে পারেন। এছাড়া কলা, নরম সাদা ভাত, টোষ্ট করা ব্রেড, সিদ্ধ আলু খাওয়া যেতে পারে। পরিমানে অল্প হলেও বারবার খাবার খেতে হবে। ডায়রিয়া হলে বেশি পরিমানে তরল খাবার খেতে হবে। সারাদিনে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। এছাড়া স্যুপ, ডাবের পানি, ভাতের মাড় -এগুলো ডায়রিয়া রোগীর জন্য বিশেষ উপকারী।
ডায়রিয়া হলে কিছু কিছু খাবার হজমে সমস্যা করে। এসময় ঝাল খাবার, ভাজাপোড়া, মিষ্টি জাতীয় খাবার, অতিমাত্রায় আঁশযুক্ত খাবার যেমন- শক্ত ভাত, বাদাম, পেয়াজ, রসুন, প্যাকেটজাত খাবার, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি, টক ফল, দুধজাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত।
শিশুদের খাওয়ার স্যালাইনের পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবার খাওয়াতে হবে। বারবার অল্প পরিমানে নরম খাবার তাদের দিতে হবে। যেসব শিশু মায়ের দুধ খায় তাদের বারবার মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। ডায়রিয়া সাধারণত দুই থেকে তিনদিন স্থায়ী হয়।
তবে এর বেশি সময় স্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অনেকের আবার ডায়রিয়া হলে বমি হয় কিংবা জ্বর থাকে। এমন হলেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে