পুলিশকে চাঁদা দিয়ে না খেয়ে রোজা রাখলেন অসহায় ‘রিকশাওয়ালা’ – News Portal 24
ঢাকাThursday , ৬ মে ২০২১

পুলিশকে চাঁদা দিয়ে না খেয়ে রোজা রাখলেন অসহায় ‘রিকশাওয়ালা’

নিউজ পোর্টাল ২৪
মে ৬, ২০২১ ৫:৫৩ অপরাহ্ন
Link Copied!

নিউজ পোর্টাল ২৪ ডেস্ক:: ময়মনসিংহের ভালুকায় ভরাডোবা হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহায় দরিদ্র শামীম নামে এক রোজাদার রিকশাওয়ালার কাছ থেকে ৭০০ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে- মঙ্গলবার গভীর রাতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা বাসস্ট্যান্ড ফুটওভার ব্রিজের পাশে ইউটার্নে।

এ ঘটনায় ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তার ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে বুধবার রাত আড়াইটার দিকে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাজটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়।

তার স্ট্যাটাসে জানা যায়, ‘রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য সিডস্টোর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় তিনি দেখেন পার্শ্ববর্তী উপজেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার গাড়াজান পণ্ডিতবাড়ি গ্রামের মৃত মহর আলীর ছেলে রিকশাচালক শামীম অটোরিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।’

লোকটি এসে চেয়ারম্যানকে বলল কোথায় যাবেন? চেয়ারম্যান বললেন, ‘না এখানেই, চেয়ারম্যান যে ভালুকা যাবেন তা বলেননি।’

তখন চেয়ারম্যান ওই অটোরিকশা চালককে জিজ্ঞেস করেন, ‘এত রাতে কি যাত্রী পাওয়া যায়?’ লোকটি বলল রোজা থেকে সারাদিন রিকশা চালাতে পারি না। তাই রাতেই যা পাই তা দিয়ে সংসার চালাই আর অটোরিকশার কিস্তি দিতে হয়।

তবে স্যার কী করব, ‘গত মঙ্গলবার রাতে ৬০০ টাকা ইনকাম হয়েছিল। কয়েকজন পুলিশকে থানার সামনে নামিয়ে দিয়ে যখন আমি ভালুকা বাসস্ট্যান্ড ইউটার্ন নেই ঠিক সেই সময় হাইওয়ে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আমাকে থামায় আর বলে আমার অটোরিকশাটি তারা নিয়ে যাবে। একপর্যায়ে হাইওয়ে পুলিশ এক হাজার টাকা দাবি করে।’

এরপর অটোরিকশার চালক শামীম অনেক ‘কাকুতি-মিনতি’ করে হাইওয়ে পুলিশকে বলে স্যার আমি সারাদিন রোজা থেকে কাজ করতে পারি না। তাই ইফতারের পর থেকে ৬শ’ টাকা পেয়েছি। টাকা দিয়ে চাল ও ঢাল কিনব, কিন্তু কোনো কথাই তারা শুনল না।

শেষপর্যন্ত আমার কাছে আগের ১০০ টাকা ছিল আর ইনকামের ৬০০ টাকাসহ মোট ৭০০ টাকা হাইওয়ে পুলিশকে দিয়ে অটোরিকশাটি নিয়ে খালি হাতে বাসায় যাই।

আরও পড়ুনঃ  বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ ১১ জেলের সন্ধান মিলেছে ভারতে

পরে না খেয়ে রোজা রেখে আজকেও আবার পেটের দায়ে এত রাতে আছি স্যার। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের প্রশ্ন হলো, ‘আমরা কোথায় বসবাস করি?’

ফেসবুক স্ট্যাটাসের মন্তব্য কলামে অনেকেই লেখেন, ‘হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজির কারণে রিকশা, অটোভ্যান, হাইওয়ে মিনি, প্রাইভেটকার, মাইক্রেবাস চালকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’

ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, ‘ঘটনার রাতে ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডিউটি ছিল এপিএসআই আবু তাহেরের। আমি যোগদান করার পর আমার লোকজনকে বলে দিয়েছি তার যেন কোনো রিকশাওয়ালাকে অযথা হয়রানি না করেন। তারপরও যদি কেউ এ জাতীয় ঘটনা করে থাকে তাহলে বিধিগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সূত্র: যুগান্তর।